তফসিল ঘোষণার আগেই দলীয় মনোনয়নের দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

তফসিল ঘোষণার আগেই দলীয় মনোনয়নের দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

Brand Bazaar

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়ে দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে প্রার্থীকে নিজ-নিজ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করতেও বলা হবে। তফসিল ঘোষণার পরে মনোনয়ন বোর্ডের বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবে আওয়ামী লীগ।  গত শনিবার (৬ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও  মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ দূর করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের এমন একাধিক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তফসিল ঘোষণার আগেই দলীয় মনোনয়নের দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য  বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। তাদের নির্বাচনি মাঠ তৈরি করে রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলীয় সভাপতি।’ ওই নেতা জানান, ‘নির্বাচন এলে অনেক মনোনয়ন-প্রত্যাশী নির্বাচনি মাঠে নেমে পড়েন। এতে জনপ্রিয় এমপিদের নামেও তারা কুৎসা রটাতে থাকেন। অনেক জায়গায় দেখা যায়, ওই মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা মূলত নব্য আওয়ামী লীগার। কিন্তু ক্ষতি করছেন একজন ত্যাগী ও জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতার। এটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মাঠের রাজনীতিতে বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া, তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী চূড়ান্ত হলে সমন্বয় করাও কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী দেখা যায়। এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এড়াতে প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যারা মনোনয়ন পাবেন, তফসিলের আগেই কেন্দ্র থেকে কাজ করে যেতে নির্দেশ দেওয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান  বলেন, ‘একাদশ সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।’

দলের সম্পাদকমণ্ডলীর দুই নেতা জানান, এই সিদ্ধান্তে দলের লাভের দিক হলো, একজন প্রার্থীকে আগে থেকে সবুজ সংকেত দিলে মাঠ গুছিয়ে নিতে প্রার্থীর জন্য সুবিধা হবে। কোনও ভুল থাকলে প্রার্থী হিসেবে শোধরানোও সম্ভব হবে। প্রার্থিতা নিয়ে কোন্দলও আগে থেকেই নিরসন করা সম্ভব। এছাড়া নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। এর মধ্যে অনেক কাজ বাকি। প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হয়ে গেলে কিছুটা অবসর পাওয়া যাবে।’

জানতে চাইলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘দলীয় সভাপতি মাঠ জরিপে অবগত হয়েছেন, বর্তমান এমপি আর মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের মধ্যে সারা দেশেই কোন্দল চলছে। এতে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে। মাঠের রাজনীতিতে একপক্ষ ঘরে বসে আছে, আরেক পক্ষ মারামারি ও সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাংগঠনিক কাজে কারও কোনও খেয়াল নেই। এদিকে একমাত্র মনোনয়নকে কেন্দ্র করে আভ্যন্তরীণ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে শুরু করেছে, তাতে বিএনপি সমালোচনার সুযোগ পেয়ে যেতে পারে যেকোনও সময়ে। এই সুযোগ না দিতে দলীয় সভাপতির এই  সিদ্ধান্ত।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment