ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে ভোট হবে উৎসবমুখর- সিইসির

ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে ভোট হবে উৎসবমুখর- সিইসির

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচন এবং দুই সিটির সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। প্রয়োজন হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে বলেও সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ার করেন তিনি। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের কাছে এমন কথা বলেন তিনি।
 ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে ভোট হবে উৎসবমুখর- সিইসির

ভোট বর্জন না উৎসবমুখর হবে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সবার অংশগ্রহণে উৎসবমুখর ভোট হবে। তার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ কমিশন থেকে নেয়া হবে।

ব্যালট ছিনতাই বা জোর করে বাক্সে ব্যালট পেপার ঢুকিয়ে দেয়ার ঘটনা হলে কমিশনের ভূমিকা তখন কেমন থাকবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমরা দেখব, বিচার বিশ্লেষণ করব এবং যদি ভোট বন্ধ করার মতো পর্যায়ে যায়, তাহলে বন্ধ করার ক্ষমতা কমিশনের আছে।

গতবারও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ভোট বর্জন করেছিল। এবার তেমন ঘটনা ঘটবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সময় কেন তারা নির্বাচন বর্জন করেছেন, সেটি আমি বলতে পারব না। তবে এবার তারা নির্বাচনে থাকবেন বলে আশা করি। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে কারো প্রতি শৈথিল্য দেখানো হবে না।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকা উত্তর সিটিতে একটি এবং দক্ষিণ সিটিতে একটি  কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করার চিন্তা আছে। যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে, আর যদি কারো কোনো আপত্তি না থাকে তাহলে দুটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১৮ জানুয়ারি, যাচাই বাছাই ২১ ও ২২ জানুয়ারি, প্রত্যাহার ২৯ জানুয়ারি,  প্রতীক বরাদ্দ ৩০ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ করা হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি।

গত বৃহস্পতিবার কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং আলাদাভাবে ঢাকার দুই সিটিতে তিনটি তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নতুন ১৮টি করে সাধারণ ওয়ার্ড এবং ছয়টি করে সংরক্ষিত ওয়ার্ড যুক্ত হয়। এগুলোতে এখনো কোনো নির্বাচন হয়নি। ২৬ ফেব্রুয়ারি এসব ওয়ার্ডেও নির্বাচন হবে। এসব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যারা নির্বাচিত হবেন তাদের মেয়াদ কত দিন হবে, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন আইনে কিছু উল্লেখ না থাকলেও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান পরিষদের মেয়াদ যত দিন বাকি আছে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচিতদের মেয়াদ হবে তত দিনই থাকবে। মেয়াদ নির্ধারণ করা নিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন হবে না।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ ১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করে। আইন অনুযায়ী ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ উপ-নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। এ ছাড়া দুই সিটির আশপাশের ইউনিয়নযুক্ত করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ড গঠন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরপর গত ৮ আগস্ট এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট করতে ইসিকে অনুরোধ জানানো হয়।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ডিএনসিসিতে সাধারণ ওয়ার্ড  ( আগের ৩৬+ সংযুক্ত নতুন ১৮) ৫৪টি; সংরক্ষিত ওয়ার্ড (আগের ১২+ নতুন ৬) ১৮টি; ভোটকেন্দ্র ( আগের ১০৯৩+ নতুন ২৫৬) ১৩৪৯টি (সম্ভাব্য); ভোটকক্ষ ৭৫১৬টি (সম্ভাব্য); অস্থায়ী ভোটকক্ষ (আগের ২৭৭+ নতুন ৬৮) ৩৪৫টি (সম্ভাব্য)।

এ ছাড়া ডিএনসিসিতে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৫৯০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ২২ হাজার ৭২৬ জন এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৪ জন। এর আগে ২০১৫ সালের নির্বাচনে এই সিটিতে মোট ভোটার ছিল ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিল ১২ লাখ ২৪ হাজার ৭০১ জন এবং নারী ভোটার ছিল ১১ লাখ ২০ হাজার ৬৭৩ জন।

ডিএসসিসির (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন) সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ২৩৩টি; ভোটকক্ষ ১২৪০টি, অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫৬টি। এসব ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৬ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ০৯৪ জন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment