পুঠিয়ায় ইটভাটার প্রভাবে ১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসলহানী

পুঠিয়ায় ইটভাটার প্রভাবে ১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসলহানী

আরিফুল রুবেল (পুঠিয়া প্রতিনিধি)রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠেছে ১৪টি ইটভাটা। ওইসব ভাটায় অতি নিন্মমানের কয়লা ব্যবহারের কারণে বিষাক্তকালো ধোয়ায় পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটার প্রভাব দেখা দিয়েছে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে প্রতি বছর তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ফসলহানী ঘটছে। উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার ৬টি ইউপিতে ১২টি ও পৌরসভা সদরে দুটি ইটভাটা রয়েছে। যার বেশীরভাগ ইটভাটা কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই বিভিন্ন দপ্তরেরবিশেষ সুবিধা নিয়ে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় মোট ১৫ হাজার ৫২ হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়।বাকি এক হাজার ৫২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে। ভালুকগাছি ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী এলাকার কৃষক আবু তালেব বলেন, আমাদের এলাকায় ফসলি মাঠের মধ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে যত্রতত্র একাধিক ইটভাটা গড়ে উঠেছে।
পুঠিয়ায় ইটভাটার প্রভাবে ১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসলহানীগত এক যুগেরও বেশীসময় থেকে ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে প্রতি বছর আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ফসলহানী হচ্ছে। এ ব্যাপারে কৃষকরা বিভিন্ন সময় উপজেলা কৃষি অফিস ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরএকাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না। যার কারণে অনেক কৃষকরা বাধ্য হয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন। পৌর এলাকার শরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি নিয়ম অনুসারে পৌর এলাকায় ইটভাটা অবৈধ হলেও এখানে ব্যতিক্রম। ভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তর ম্যানেজ করে পৌরসদরের মধ্যে একই স্থানে দু’টি ইটভাটা গড়ে তুলেছে। যার কারণে আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া ওই ভাটার কারণে দুটি বিলে দেখা দিয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা।পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর এক হাজার বিঘা জমির ফসল উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর রহমান বলেন, ইটভাটাগুলোতে অতি নিন্মমানের কয়লা ব্যবহারের কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। এতে করে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাব এখন কৃষি উপরপড়ছে। যার কারণে ভাটার আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সকল ফসলি জমিতে এর বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। যার কারণে কৃষকরা প্রতিনিয়ত ফসলহানীর মুখে পড়ছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা বলেন,  ইটভাটার কারণে ফসলহানীর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ইটভাটার এ বিষয়টিউপস্থাপন করা হয়। ভাটা মালিকরা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় আইন অমান্য করে প্রতিনিয়ত তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment