ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি চিকিৎসক সংকট

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি চিকিৎসক সংকট,

জয় মহন্ত অলক ঠাকুরগাঁও ॥
চিকিৎসক সংকট আর কর্মরত চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি নিজেই রোগী হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের মোট পদ ২৭টি। তবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন এবং ডেপুটেশনে ২ জন। কর্মরত ৩ জন ডাক্তারের মধ্যে কোন সময় ১ জনও নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন না এমনটাই অভিযোগ করছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যেন খেলার মাঠ, আর চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা দর্শক। হাসপাতালের বাইরে এবং আশপাশের দোকানগুলোতে ভিড় জমিয়েছে সেবা নিতে আসা রোগীরা। নয়টার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা যেন ভুলেই গেছেন চিকিৎসকেরা। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন সকাল সাড়ে ১০টার পরিদর্শনে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধুমাত্র কর্মচারী ছাড়া কোন চিকিৎসককে না পেয়ে হাজীরা খাতায় অনুপস্থিত দেখিয়ে চলে যান।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি চিকিৎসক সংকট, চিকিৎসক-সংকটে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার দুস্থ রোগীরা। গাইনি চিকিৎসক ও অবেদনবিদ না থাকায় কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে অন্তঃসত্ত্বাদের অস্ত্রোপচার। যদিও এর আগে অনুমোদন না থাকলেও প্রায় ২ বছর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আর এমও) ডাঃ আবুল কাসেম অন্তঃসত্ত্বাদের অস্ত্রোপচার করতেন। এদিকে, সাত বছর ধরে নষ্ট হয়ে আছে এক্স-রে যন্ত্রটি। হাসপাতালটি হওয়ার পর থেকে এখানে আসেনি কোন আল্ট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্র। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে হাসপাতালটি। এখানে চিকিৎসকের পদ আছে ২৭টি। কর্মরত আছেন তিনজন ও ডেপুটেশনে ২ জন। ১১টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদই রয়েছে খালি। চিকিৎসক-সংকটে জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে ৩১ শয্যার। দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে কিন্তু মেরামতের অভাবে সেটিও অকেজো। এর বাইরে উপজেলার লাহিড়ীতে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ০৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই কোন চিকিৎসক।

চিকিৎসা নিতে আসা আমজানখোর ইউনিয়নের সাহেরা বেগম, কুলসুম বেওয়া বলেন, ৭ মাইল রাস্তা পার হয়ে এসেছি, শুধু ডাক্তারদের ব্যাস্ততাই দেখছি। ডান্ডা লাগছে, দুটা ওসুধ পেলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারতাম।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে কর্মরত ফার্মাসিস্ট শাহাজাহান আলী বলেন, বহির্বিভাগে ৪০-৫০ রোগী হয় প্রতিদিন। এর দুই-তৃতীয়াংশই নারী। আমরা সাদ্ধমত ওষুধ দিতে চেষ্টা করি।

চিকিৎসক সংকট ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ খায়রুল কবির বলেন, চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তবে কর্মরত চিকিৎসকরা কেন অনুপস্থিত? এ বিষয়ে শ্রীঘ্রই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment