দরদাম, ব্যবহার পদ্ধতি এবং কিছু প্রাথমিক জ্ঞান থাকলে এয়ার কন্ডিশনার কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
প্রাথমিক ধারণা
প্রথমতো বাড়ির ধরন বুঝে এসি কিনতে হবে। যে রুমে এসি লাগাবেন তাতে যদি জানালা থাকে তবে পছন্দ অনুসারে ভালো ব্র্যান্ড দেখে ‘উইন্ডো এসি’ কিনে নিতে পারেন। ঘরের আকার যদি ছোট হয় তবে এই ধরনের এসি কেনা যেতে পারে। এক্ষেত্রে দামটাও তুলনামূলক কম। তবে ঘরের আকার যদি বড় হয় কিংবা ঘরে যদি কোনো জানালা না থাকে তবে ‘স্প্লিট এসি’ কিনতে হবে। মূলত বসার ঘর কিংবা অফিসের বড় রুমে ব্যবহারের জন্য ‘স্প্লিট এসি’ কেনা হয়।
এছাড়াও এয়ার কন্ডিশনার কেনার আগে অবশ্যই ঘরের আকার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।এ সম্পর্কে কথা হয় রাজধানীর ব্রান্ড বাজারে বিক্রয় প্রতিনিধি চঞ্চল বাশার বলেন, “এসি কেনার আগে ঘর কত স্কয়ার ফিট তা জানা দরকার। ঘরের আকার সর্বোচ্চ ১৪০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত হলে এক টন ক্ষমতাসম্পন্ন এসি কিনলেই চলবে। তবে ঘরের আকার ১৪০ থেকে ১৯৬ স্কয়ার ফিটের মধ্যে হয় তবে দেড় টন কার্যক্ষমতার এসি কিনতে হবে।”
“যে রুমে এসি লাগাবেন তা যদি টপ ফ্লোরে হয় তবে ঘর আকারে ছোট হলেও তুলনামূলক বেশি ক্ষমতার এসি লাগাতে হবে। কারণ সাধারণত ভবনের উপরের তলায় সূর্যরশ্মির তেজ বেশি থাকে এবং ঘর বেশি গরম থাকে।” তাছাড়া এয়ার কন্ডিশনারে ইনভার্টার কিংবা ইকোন্যাভি নামক পাওয়ার সেভিং অপশন থাকে। এ সম্পর্কেও ধারনা থাকা দরকার।
দরদাম
গরমের কথা মাথায় রেখে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘ব্রান্ড বাজার’ এনেছে বিভিন্ন মডেলের এয়ার কন্ডিশনার। বিভিন্ন জায়গায় ব্রান্ড বাজারের শো রুমে পাওয়া যাবে ভিন্ন ভিন্ন মডেলের এয়ার কন্ডিশনার। মানভেদে এসব এয়ার কন্ডিশনারগুলোর দাম ৩২ হাজার থেকে ৫৫ হাজার ২৫০০০০ টাকা পর্যন্ত। শর্তসাপেক্ষে O General Air Conditioner , Panasonic Air Conditioner, Daikin Air Conditioner, LG Air Conditioner , Carrier Air Conditioner , Globe Aire এসিতে দিচ্ছে ছয় মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি এবং তিন বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি।
এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন বিপনিবিতান ঘুরে জানা গেলো বর্তমানে বাজারে প্যানাসনিক, এলজি, সনি, ক্যারিয়ার, শার্প এবং ওয়ারপুল ব্র্যান্ডের এসির চাহিদা বেশি।
‘প্যানাসনিক’ ব্র্যান্ডের এক টন ক্ষমতার ইনভার্টার এসি পাওয়া যাবে ৭৫ হাজার টাকায়। দেড় টন ক্ষমতার ইনভার্টার এসি কিনতে হলে গুনতে হবে ১ লাখ টাকা। একই ব্র্যান্ডের ইকোন্যাভি এসির দাম এক থেকে দেড় টনের জন্য ৭৩ হাজার টাকা থেকে ৯৫ হাজার টাকা।
এছাড়া প্যনাসনিক’য়ের এক টন ক্ষমতার এসিতে ইনভার্টার এবং ইকোন্যাভি অপশন একই সঙ্গে পেতে হলে খরচ করতে হবে ৮৫ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা।এই এয়ার কন্ডিশনারগুলোর ওপর দুই বছরের পার্টস ওয়ারেন্টি এবং তিন বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এলজি’র বিভিন্ন মডেলের স্প্লিট এয়ার কন্ডিশনার পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে এক থেকে দেড় টন ক্ষমতার এলজি এসি গুলোর দাম হতে পারে ৬৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এলজি’র এসিগুলোর দাম কিস্তির মাধ্যমে দেওয়া যাবে।
উইন্ডো এসি’র ক্ষেত্রে জেনারেল’য়ের দেড় টনের এসি পাওয়া যাবে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায়। একই ব্র্যান্ডের দুই টনের উইন্ডো এসি কিনতে হলে গুনতে হবে ৬৫ থেকে ৬৯ হাজার টাকা। ‘ক্যারিয়ার’য়ের উইন্ডো এসি পাওয়া যাবে ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। একই দামের মধ্যে ‘গ্রি’ ব্র্যান্ডের উইন্ডো এসি পাওয়া যাবে।
যত্নআত্তি
শহরের বিভিন্ন এয়ার কন্ডিশনার শো রুমের বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল এসির ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হল ‘কুলিং’ বা ঠাণ্ডা করার ক্ষমতা কমে যাওয়া। এক্ষেত্রে এসির ভেতরের নেট খুলে ডাস্ট ক্লিনিং করে নিতে হবে। ব্যবহারকারী নিজেই সাধারণ উপায়ে এসির ইনডোর খুলে নেট ওয়াশ করে নিতে পারেন।এছাড়া কুলিং একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে বুঝতে হবে এসির ভেতরে গ্যাস ফুরিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সেবা প্রদানকারী প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গ্যাস রিফিল করে নিতে পারেন। বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানের সময় পার হয়ে গেলে সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে।