কামরুল হাসান, বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:-
অঞ্জনা রানী (৩০) নামের এক গৃহবধূকে ব্যবসার টাকা চেয়ে না পেয়ে হাঁতুড়ি পেটা করে একটি পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি পাঁচ বছর বয়সের শিশু প্রান্ত। তার বাবা পরিমল শীল ব্লেড দিয়ে পুচিয়ে আঙ্গুল কেটে দিয়েছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গৃহবধূ অঞ্জনা রানী জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী পরিমল চন্দ্র শীল ব্যবসার নামে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিল। তার বাবা ফরেশ্বর চন্দ্র শীল একজন নি¤œ আয়ের মানুষ। খেয়ে না খয়ে কোন রকম দিন যাপন করছেন। ঘটনার দিন সোমবার বিকালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের হনুয়া গ্রামে শ্বশুর বিজয় শীলের বাড়িতে বসে টাকার জন্য স্বামী পরিমল শীল তাকে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাঁতুড়ি পেটা করে। এসময় তার শ্বাশুরি মায়া রানীও তাকে চুলের মুঠি ধরে চরথাপ্পর মারে। একপর্যায়ে টেনেহেচরে মাটিতে ফেলে হাঁতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙ্গে দেয়। তার শিশু সন্তান প্রান্ত মায়ের এ অবস্থা থেকে তাকে জড়ি ধরলে পাষন্ড বাবা পরিমল তাকেও মারধর করে এবং ব্লেড দিয়ে পুচিয়ে ডান হাতের দুইটি আঙ্গল কেটে দেয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে অঞ্জনা রানী ও তার ছেলে প্রান্তকে একটি ভ্যান যোগে বাড়ি থেকে ৩-৪ মাইল দূরে গোপালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ফেলে যায়। স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় অঞ্জনা রানী সেখান থেকে খেয়া পার হয়ে ওপারে কাছিপাড়া আসেন। রাত ৯টার দিকে আরেকটি ভ্যান গাড়ি যোগে বাবার বাড়ি বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে চলে আসেন এবং ওই দিন রাত ১১টায় তাকে বাউফল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
এ খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে বাউফল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, নির্যাতিত অঞ্জলী রানী আঘাতের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। এসময় মায়ের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে অবুঝ সন্তান প্রান্ত তাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। অঞ্জনা রানীর কপালসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দগদগে আঘাতের চিহৃ। ডান পায়ে ব্যান্ডেজ করা।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন, ডান পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তাকে স্বাভাবিক হতে কয়েক মাস সময় লাগবে। হাঁতুড়ি পেটার কারণে শরীরের বাইরে ফুলা জখম হলেও অভ্যান্তরে রক্তক্ষরন হয়েছে।
