খালেদার ‘ডু অর ডাই’

খালেদার ‘ডু অর ডাই’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড ঠেকানো এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহায়ক সরকারের দাবি আদায়ে আসছে বিএনপির ডু অর ডাই পণ। ইংরেজি ডু অর ডাই বাক্যটির অর্থ- হয় মর না হয় বাঁচো। আন্দোলন চাঙা করতে তারা এই চিন্তা মাথায় নিয়ে রাজপথে নামবে। আজ শনিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সারাদেশের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এই বার্তা দেওয়া হতে পারে। বার্তাটি খালেদা জিয়া ঘোষণা করবেন নাকি কেন্দ্রীয় নেতারা তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

ছাত্রলীগের নতুন কমিটির প্রতিবাদে বিক্ষোভ : সা.সম্পাদকের কুশপুত্তলিকা দাহ

তবে আপাতত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ মামলার রায়ে যাতে শাস্তি না হয় এবং তাকে জেলে যেতে না হয় সেজন্য ইতোমধ্যে বিএনপি, অঙ্গ সংগঠন এবং বিএনপি সমর্থনপুষ্ট পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যে গোপনে বেশ কয়েকটি প্রাক বৈঠক হয়েছে। তাতে বেশিরভাগ নেতাকর্মীর মুখ থেকে এই ডু অর ডাই পণ করা হয়েছে। শুধু এই পণই নয়, খালেদা জিয়ার মামলা ও সহায়ক সরকারের দাবিকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা আন্দোলনের জন্য সোচ্চার দেখা গেছে। এসব গোপন বৈঠকে কেবল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীই নয়, বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতাকর্মীদেরও আন্দোলন চাঙা করতে প্রবল আগ্রহ দেখা গেছে। তারা ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদার রায়ের দিন রাজপথে নামতে প্রস্তুত আছে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এমনও দেখা গেছে, এসব বৈঠকে অংশ নিতে পেশাজীবীদের বিশেষ করে চিকিৎসকদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতে পর্যন্ত যাননি। এমনই একজন চিকিৎসক বৃহস্পতিবার আমার সংবাদকে বলেন, সরকার চাচ্ছে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বিএনপিবিহীন একতরফা করে আবার ক্ষমতায় আসতে। আওয়ামী লীগ সরকারের এই মনোভাবের কারণ ২০১৫ সালে টানা তিন মাস অবরোধ-হরতালে বিএনপির ব্যর্থতা। সরকার মনে করছে এবারও আন্দোলন হয় ফাঁকাবুলি, কিংবা আন্দোলন ডাকলেও ব্যর্থ হবে বিএনপি। বিএনপির নেতাকর্মীরা আন্দোলন ডেকে ভয়ে রাস্তায় নামবে না। ঘরে বসে থাকবে এবং আন্দোলন ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, সরকার ও সরকারি দলের এই আশা নিরাশায় পরিণত করে দেব। এবার আন্দোলন চাঙা করে দাবি আদায় করতে হয় মরব, না হয় বাঁচবো। ডু আর ডাই মনোভাব নিয়ে মাঠে নামব। তবে নেতাকর্মীদের অনেকেই লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে এসে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার প্রত্যাশা করছেন। তারা জানেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার হবেন। কিন্তু এই গ্রেপ্তারকে তারা পজেটিভ হিসেবে দেখছেন। তাদের ধারণা তারেক জেলে থাকলে তখন সহায়ক সরকারের দাবির পাশাপাশি তার মুক্তির দাবিও জোরালো হবে। এর কারণ বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলে অসংখ্য কর্মী তারেকের ভক্ত। প্রিয় নেতা জেলে থাকলে ডর-ভয়ের তোয়াক্কা না করে মাথাচাড়া দিয়ে জেগেও ওঠতে পারে এসব কর্মী। ডু অর ডাই প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ডু অর ডাই বলতে চাচ্ছি না। তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা জেল-জুলুমের ভয় করে না। তারা গণতন্ত্র উদ্ধারে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment