শ্রীপুরে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ

শ্রীপুরে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ

সাগর আহামেদ মিলন গাজীপুর প্রতিনিধিঃ-
গাজীপুর শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামের অসহায় খেটে খাওয়া কৃষক পরিবারের কাছ থেকে সুকৌশলে ওই দালালচক্রের সক্রিয় সদস্যরা অধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যায়।এ বিষয়ে হয়দেবপুর এলাকার ইব্রাহীম খানের পুত্র অহাব খান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকি দালাল চক্রের হুমকির কারণে শ্রীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছেন। এতে দালালচক্রের সদস্যরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।অভিযোগে জানা যায়,

শ্রীপুরে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎহয়দেবপুরের মড়ল বাড়ি থেকে দরগা বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিদ্যুৎ অফিস। এ সময় একটি চক্র ওই লাইনের নির্মাণ ও সংযোগ বাবদ প্রার্থীদের কাছ থেকে মিটার প্রতি ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা তোলে। এভাবে এলাকা থেকে প্রায় ৪ শতাধিক মিটারের জন্য অর্ধকোটি টাকার মতো হাতিয়ে নেয়।অভিযোগ ও সরেজমিন পর্যবেক্ষণে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পিছনে যাদের নাম উঠে আসে তারা হলেন, ইউসুফ খানের পুত্র মাইন উদ্দিন খান, মৃত সামছুল হক মৃধার পুত্র রিজন মৃধা,মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র কিরন মৃধা,বাশার খান ও নাজিম উদ্দিন যারা প্রত্যেকেই ওই একই এলাকার বাসিন্দা। তারা ভালুকার ঠিকাদার শামীম আহম্মেদের সমন্বয়ে টাকা তোলে।প্রতারণার শিকার জসিম উদ্দিন বলেন, সে ইউসুফ খানের পুত্র মাইন উদ্দিন খানের কাছে ২ হাজার টাকা দিয়েছে। পরবর্তীতে আরো ৫ হাজার টাকা দিতে ৭ দিনের সময় বেঁধে দেন, না দিলে বিদ্যুৎ লাইন পাবে না বলে জানায়।নাজিম উদ্দিন বলেন, তিনিও আপাতত ৪ হাজার টাকা দিয়েছেন । গৃহবধূ রুনা আক্তার বলেন, তিনি বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তার ছাগল বিক্রি করে দালালদের হাতে ৫ হাজার ৩০০ টাকা দিয়েছেন।জোসনা রবি দাস বলেন, অনেক কষ্ট করে ধার দেনা করে ৫ হাজার ৩শ টাকা দিয়েছি, সাথে চালও দিয়েছি কিন্তু পুরা কপাল বিদ্যুতের দেখা পেলাম না। এরকম আনোয়ারা বেগম,রিপা আক্তারসহ অনেকেই বলেন, টাকা তো দিয়েছিই সাথে মিটার প্রতি এক কেজি চাউল, পিয়াজ ও তেল দিয়েছি।অভিযুক্ত মাইন উদ্দিন খান টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওয়ারিং লাইন নির্মাণ বাবদ ১ লাখ টাকা উত্তোলন করে ঠিকাদারকে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঠিকাদার শামীম মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।টাকা উত্তোলনকারী অন্য আরেকজন কিরণ মৃধা জানান, বিদ্যুৎ নিলে টাকা লাগেই সেজন্যে টাকা নিয়েছি আপনারা যা পারেন করেন গিয়া।কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল জানান, সরকার জনগণের জন্য বিদ্যুৎ সম্পূর্ণ ফ্রি করেছে এখানে কেনো টাকা লাগবে? কেউ নিয়ে থাকলে বিষয়টি দেখবো।ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাওনা জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. কামাল পাশা জানান, বিষয়টি আমি আগে শুনিনি। বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে টাকা তোলা সম্পূর্ণ আইন বিরোধী কাজ । মিটার প্রতি সরকারিভাবে মাত্র ৬৫০ টাকা লাগে এর বেশি যদি কেউ দিয়ে থাকে তাহলে সেটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পরে না তবে আমাদের ডিপার্টমেন্টের কেউ এর সাথে জড়িত থাকে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment