শ্রীপুরে অসাধু উপায় অবলম্বন করায় কেন্দ্র সহকারী সচিব আটক

সাগর আহামেদ মিলন গাজীপুর প্রতিনিধিঃ-
গাজীপুরের শ্রীপুরে এসএসসি পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন করায় কেন্দ্র সহকারী সচিবকে আটক করেছে শ্রীপুর পুলিশ। গণিত পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নপত্র সমাধানের জন্য কেন্দ্রের বাহিরে অজ্ঞাত কাউকে দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন ওই কেন্দ্র সচিব।শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলার মাওনা বহুমূখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পিয়ার আলী কলেজ ভেন্যুতে এ ঘটনা ঘটে। এতে অভিযুক্ত শিক্ষককে তাৎক্ষণিক কেন্দ্রের সকল দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।অভিযুক্ত শিক্ষক আমজাদ হোসেন নাহিন উপজেলার আলহাজ্ব ধনাই বেপারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি এসএসসি পরীক্ষার ওই কেন্দ্রের সহকারী সচিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দায়িত্বরত পুলিশ ও কেন্দ্র সচিবের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে গণিত পরীক্ষা চলছিল। আধা ঘন্টার এমসিকিউ পরীক্ষা প্রায় শেষের পথে। সাড়ে দশটার কিছু আগে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক আমজাদ হোসেন নাহিন শিক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য সংরক্ষিত লিখিত প্রশ্নপত্রের বান্ডেল থেকে একটি প্রশ্ন সরিয়ে নিজের পকেটে রাখেন। এ সময় কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলার রক্ষার দায়িত্বে থাকা শ্রীপুর পুলিশের শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শক নয়ন ভূইয়া ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই কেন্দ্র সহকারী সচিব প্রশ্নপত্রসহ কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার জন্য পিয়ার আলী কলেজ ভেন্যুর মূল ফটকের বাইরে যায় পুলিশের ওই কর্মকর্তাও তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। ফটকের বাইরে গিয়ে প্রশ্নপত্রটি অন্য কাউকে হস্তান্তরের মূহুর্তে শিক্ষককে প্রশ্নসহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন পুলিশ কর্মকর্তা। তাৎক্ষণিক শিক্ষক তার কাছে প্রশ্নপত্র থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলে তাকে নিয়ে নির্দিষ্ট কক্ষে গিয়ে ওই কক্ষে সংরক্ষিত প্রশ্নপত্রগুলো গণনা করে একটি প্রশ্নপত্র কম পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ওই শিক্ষকের পকেট থেকে প্রশ্নটি উদ্ধার করেন।বিষয়টি কেন্দ্র সচিব ও মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সিরাজকে জানান। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেন। পরে শ্রীপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়।এসএসসি পরীক্ষার মাওনা কেন্দ্রের সচিব শাহজাহান সিরাজ জানান, প্রশ্নসহ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তাকে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসাবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা পাট কর্মকর্তা আশারাফুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্রসহ শিক্ষক আটক হয়েছেন এর শক্ত বিচার দাবী করি।প্রশ্নপত্রসহ শিক্ষককে আটক কারী শ্রীপুর থানার পুলিশের পিএসআই নয়ন ভূইয়া বলেন, প্রশ্ন পকেটে রাখার ঘটনাটি দেখে তাকে হাতেনাতে ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই শিক্ষক প্রশ্নপত্র নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে যাচ্ছিলেন।
আমি তার পিছু নিই। ফটকের বাইরে গিয়ে তিনি প্রশ্নটি অজ্ঞাত কাউকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় আমি তাকে ধরে ফেলি।অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, প্রশ্ন আমি নিয়েছিলাম তবে বাহিরে যায়নি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময় কেন্দ্র সহকারী সচিবের কাছে কেন্দ্রের বাইরে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। তদন্তের স্বার্থে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্ব থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময় দায়িত্বরত অবস্থায় আমজাদ হোসেন নাহিদ নামের শিক্ষকের কাছে প্রশ্নপত্র পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।