অনুমতি না নেয়ায় কালো পতাকা কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার বিষয়ে পুলিশের বক্তব্যের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন রেখেছেন, এই ধরনের কর্মসূচিতে কেন অনুমতি নিতে হবে। শনিবার দুপুরে দলীয় কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল কিছুটা রাগী স্বরে বলেন, ‘এই কর্মসূচির অনুমতি লাগবে কেন, আর সব কর্মসূচির অনুমতি নিতে হবে কেন?’। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের দুই দিন আগে ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় সভা, সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ করেন। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও তোলা হয়নি। তবে এর মধ্যেই ৯ ফেব্রুয়ারি বিএনপি বিক্ষোভ, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ, ১২ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন, ১৩ ফেব্রুয়ারি অবস্থান, ১৪ ফেব্রুয়ারি অনশন ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে জমায়েত হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এসব কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয়নি। তবে ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
আর এর প্রতিবাদে আজকে বিএনপির কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে লাঠিপেটা, রঙিন পানি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে বিএনপি কার্যালয় এলাকায় থাকা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শিবলী নোমান বলেন, ‘আজকে তাদের এই কর্মসূচি করার অনুমতি ছিল না। সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করেছে বলে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’ পুলিশ কর্মকর্তার এই বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক একটা কর্মসূচি করার জন্য অনুমতি নিতে হবে? আমরা রাস্তা ব্লক করিনি, ১৪৪ ব্রেক করিনি, আমরা কোনো মিছিল করিনি…’। ‘আমরা প্রতিবাদ করতে পারব না, কালো পতাকা দেখিয়ে, এটা মৌলিক ব্যাপার একটা, ফান্ডমেন্টাল জিনিস, ফান্ডমেন্টাল যে রাইট, সে রাইট তারা কেড়ে নিতে চায়।’ ‘তাহলে কি এখন প্রেস কনফারেন্স করতে অনুমতি লাগবে? আমার বাড়িতে আমার চার-পাঁচ জন নেতার সাথে কথা বলার কি অনুমতি লাগবে?’-জানতে চান বিএনপি মহাসচিব। এর আগে ফখরুল বলেন, আজকের কর্মসূচিতে বাধা দিতে তাদের নারী কর্মীদের ওপর নজিরবিহীন হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মহিলাদের ওপর অত্যাচার চলছে, মহিলাদের ওপর নির্যাতন, আপনারা দেখছেন মাটিতে ফেলে দিয়ে পেটানো হয়েছে।’ ‘মহিলা পুরুষদের অন্যায়ভাবে পুরুষ পুলিশরা গ্রেপ্তার করেছে, সেটা আমরা কোনোদিন দেখিনি। আমাদের অফিসে ঢুকে গলায় পারা দিয়ে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। … এই যদি অবস্থা হয় এই দেশে, তারা যে গণতন্ত্রের কথা বলে, গণতন্ত্র মোনাফেকি ছাড়া আর কিছু না।
’ ফখরুল বলেন, ‘আজকে এমন একটা জায়গা নেই, এমন একটা ওয়ার্ড নেই যেখানে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরোধীদলের নেতকর্মীদের মিথ্যা মামলো দেয়া হচ্ছে না, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’ ‘আমাদের চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে অ্যাক্টিং চেয়ারপারসন, স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে শুরু করে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা। আমরা সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি, নইলে এই দেশে কখনও কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’