জগন্নাথপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ, এলাকায় উত্তেজনা

জগন্নাথপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ, এলাকায় উত্তেজনা
মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হাসিমের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জগন্নাথপুরে ইউপি  চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ, এলাকায় উত্তেজনাসরজমিনে জানাযায়, গত বুধবার(৭ মার্চ) বিকাল ৩ ঘটিকার দিকে সুনামগঞ্জ জেলাধীন জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তালিকাভূক্ত জনগণের মধ্যে জনপ্রতি সরকারি ভিজিএফ এর ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হয়। এ সময় চাল ও টাকা গ্রহনকারীদের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করেন তাদেরকে ৩০ কেজির বদলে ২৫ কেজি চাল দেয়া হয়েছে। এ সময় ভিজিএফ কাডদারী জনতার সাথে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সাজাদ চেয়ারম্যান আবদুল হাসিমের বিরুদ্ধে চাল কম দেয়ার অভিযোগ করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শতশত উৎসুক জনতা ইউপি অফিসে এসে অবস্থান করেন।খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশের একটি দল ইউনিয়ন পরিষদে এসে উৎসুক জনতাকে শান্ত থকতে বলেন। রাত প্রায় ১০ঘটিকার দিকে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ ও জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী ঘটনাস্থলে পৌঁছে চাল সিলগালা করে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে উপস্থিত উত্তেজিত জনতাকে শান্তনা দিয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও অভিযোগকারী ইউপি সদস্যকে থানায় নিয়ে এসে স্ব-সম্মানে ছেড়ে দেন।

এ ঘটনায় জগন্নাথপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবদুর রব সরকার, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ধীরাজ নন্দী চৌধুরী ও জগন্নাথপুর থানার এসআই সাইফুর রহমানকে দিয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) দুপুরে তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবদুল হাসিম, অভিযোগকারী ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সাজাদ, সাংবাদিক তালুকদার আনোয়ারুল পারভেজ, জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজাহান মিয়া, যুগ্ম-সম্পাদক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া, সাংবাদিক হুমায়ূন কবির ফরিদী, ইউপি সদস্য আবদুল হাসিম, আবদুল কাইয়ূম, অর্জুন দাস,তারা মিয়া মুজাফ্ফর আলী লিটনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে সিলগালাকৃত চাল পুনঃরায় ওজন করেন। এ সময় তদন্ত কমিটি সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে ২০ টন ৫৪৯ কেজি চাল মজুদ আছে। যা দিয়ে ৬৮৬ জনের মধ্যে বিতরণ করা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটি “দৈনিক আগামীর সময়” কে জানান, পরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। ইউপি সচিব শামছুল আলম জানান, মাস্টার রোল অনুযায়ী চাল বিতরণের বাকি ৬৭৮ জন রয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সাজাদ বলেন, আমি আসার আগে আমার ওয়ার্ডের চাল বিতরণ করেন চেয়ারম্যানের লোকজন। আমি অফিসে এসে দেখি চাল ওজনে কম পাওয়া নিয়ে ভূক্তভোগী জনতার মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আমি শুধু তাদের হয়ে প্রতিবাদ করেছি। এছাড়া জব্দকৃত ৪৮ বস্তা চালের মধ্যে প্রতি বস্তায় ২৫ থেকে ২৬ কেজি চাল রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি কোন মন্তব্য করেনি। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে বাকি চাল বিতরণের দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবদুল হাসিম বলেন, চাল বিতরণকালে আমি অফিসে ছিলাম না। ইউপি সদস্য সাজাদ ও তার লোকজন চাল বিতরণ করেন। এখানে আমাকে অযথা জড়ানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাল দেওয়ার দায় তাদের, যারা চাল বিতরণ করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সাজাদ মেম্বারকে রাস্তার মাটি ভরাট কাজ করার জন্য বিগত বছর ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, সে এখন পর্যন্ত কোন কাজ করেনি। আমি তাকে কাজ করার তাগিদ দেয়ায় সে আমার উপর ক্ষুব্দ হয়ে এ হট্রগোলের সৃষ্টি করেছে। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক দিন আগে আমি বসন্ত মেলার নামে অশ্লীল যাত্রানুষ্টানের বিরোধীতা করায় একটি কু-চক্রী মহল ক্ষিপ্ত হয়ে সাজাদ মেম্বারকে দিয়ে মিথ্যা এ নাটক সাজিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment