রোহিঙ্গাদের জমিতে ঘাঁটি বানাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

রোহিঙ্গাদের জমিতে ঘাঁটি বানাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা নির্যাতনে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের ফেলে আসা গ্রাম ও জমিজমায় ঘাঁটি তৈরি করছে দেশটির সেনাবাহিনী। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সোমবার এ কথা জানিয়েছে। নতুন এক গবেষণার পর অ্যামনেস্টি বলেছে, তারা স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এমন তথ্য জানতে পেরেছে।

গত বছরের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী নৃশংস অভিযান শুরু হলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ওই সময় রোহিঙ্গাদের ৩৫০টির বেশি গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় সেনাবাহিনী।অ্যামনেস্টি বলেছে, যেসব গ্রাম ধ্বংস হয়নি এবং অবশিষ্ট যে ভবনগুলো ছিল তা নতুন করে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি নতুন প্রতিবেদনে বলেছে, ওই এলাকায় দ্রুত বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত তিনটি ভবন নির্মাণাধীন। এক ঘটনায় দেখা গেছে, যে সব রোহিঙ্গা এখনো গ্রামে ছিল তাদেরকে জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়ে ঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান বলেন, রাখাইন রাজ্যে আমরা যা দেখেছি তাহলো দেশটির সামরিক বাহিনী দ্রুত রোহিঙ্গাদের জমি দখল করে নিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে নিরাপত্তা বাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদের জন্যই নতুন ঘাঁটিগুলো স্থাপন করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি আরো বলেছে, অভিযানের সময় আগুনে পুড়েনি এমন অন্তত চারটি মসজিদ গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং এর মালপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যে সময় মসজিদগুলো ভাঙা হয়েছে যখন ওই এলাকায় সংঘাতের তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নোবেল জয়ী নেত্রী আউং সান সুচি সরকারের কোনো মুখপাত্র ও দেশটির সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি। মিয়ানমারের কর্মকর্তারা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন বাড়ি বানাতেই ওই জমিগুলো বুলডোজার দিয়ে সমান করা হয়েছে। এর আগে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও রোহিঙ্গাদের গ্রাম বুলডোজার দিয়ে সমান করার কথা বলেছে। সূত্র: গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ ও বিবিসি

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment