কলাপাড়ায় আম-কাঁঠালের মুকুলে পোকার আক্রমন  উদাসীন কৃষি বিভাগ 

কলাপাড়ায় আম-কাঁঠালের মুকুলে পোকার আক্রমন  উদাসীন কৃষি বিভাগ 

মো.মোয়াজ্জেম হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
কলাপাড়া উপজেলার সমগ্র এলাকা জুড়ে এবছর ছোট-বড় প্রতিটি আম-কাঠাঁল গাছে এত মুকুল এসেছিল যা বাড়ির মালিক থেকে শুরু করে পথচারীরাও  অবাক হয়ে এক নজর না তাকিয়ে পথ অতিক্রম করতে পারতো না। কিন্তু মাত্র অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে স্থানীয় কৃষি বিভাগের উদাসীনতা, যথাযথ পরামর্শ ও কৃষি সেবার অভাবে আম-কাঁঠালের মুকুলে সুটি মোল্ড ও মুচি পচা রোগের আক্রমনে এ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার আম-কাঠাঁল উৎপাদন সম্ভন না হওয়ার আশংকার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কাগজে-কলমে ও মৌখিক ভাবে লক্ষ্যমাত্রার ফল উৎপাদনের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের কোন কর্মকান্ড নেই বলছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১০,০০০ মেট্রিক টন। ১০ হেক্টর জমিতে কাঠাঁল চাষ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত না হানলে এ মৌসুমে উপক‚লজুড়ে আম-কাঠাঁলের বা¤পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছে কৃষিবিভাগ। কিন্তু, বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
সরেজমিনে পৌরশহরের একাধিক বাড়ীর আম-কাঠাঁল গাছে দেখা গেছে সুটি মোল্ড ও মুচি পচা রোগের আক্রমনে গাছের অধিকাংশ মুকুল কালো ছাই বর্ন হয়ে গাছের নীচে ঝড়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ পৌরশহরে কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার পরামর্শ ও সেবার জন্য ধর্না দিয়েও কোন কাজ হয়নি। বারবার তিনি স্প্রে মেশিন দেয়ার কথা বলেও না দেয়ায় আম-কাঠাঁল গাছে মুকুল আসার আগে, মটরদানা হওয়ার পর এবং মার্বেল সাইজের আকৃতি হওয়ার পরে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ঔষধ না দেয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে। একই কথা জানালেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা। যুগ যুগ ধরে একই উপজেলায় কর্মরত গ্রামীন পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা শহরে এবং শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রাজনীতি, শালিশী ও জমির দালালি কাজে লাভবান হওয়ার ধান্ধাঁয় মনোযোগী হওয়ায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ কাগজে-কলমে ও মৌখিক ভাবে লক্ষ্যমাত্রার ফল উৎপাদনের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের কোন কর্মকান্ড নেই।
কৃষি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী কৃষি সম্প্রসারন অফিসার মো: ইয়াছিন আলী উপজেলা কৃষি অফিসারের রুমে অফিস সকহারীকে দিয়ে কম্পিউটারে কাজ করাচ্ছেন। পাশের রুমে পিয়ন, পরিচ্ছন্ন কর্মী, অফিস করনিক সহ অন্যান্যরা গল্পে মশগুল। অফিসের একজন বললেন কৃষি কর্মকর্তা সরকারী কাজে দেশের অন্যত্র রয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারন অফিসার এনজিও এর একটি প্রোগ্রামে রয়েছেন এবং পৌর শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নীলগঞ্জ এলাকার জমি-জায়গার একটি শালিশে গেছেন।
সহকারী কৃষি সম্প্রসারন অফিসার মো: ইয়াছিন আলী জানান, কৃষি অফিসে কেউ এলে তাকে যথাযথ পরামর্শ ও সেবা দেয়া হয়। তিনি আরও জানান, আম-কাঠাঁলের মুকুল আসার আগে, মুকুল ধরার সময় এবং মটর দানা হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রয়োগ  করা গেলে মুকুল সংরক্ষণ এবং পোকার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment