মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ভিটায় রাখাইনদের ঘর

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ভিটায় রাখাইনদের ঘর

বর্বর সেনাহামলার মুখে রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারের যে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, সেখানেই গড়ে তোলা হচ্ছে বৌদ্ধ রাখাইনদের বসতি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুসলিমমুক্ত এলাকা গড়তেই এ উদ্যোগ।

 

কো তান কাউক গ্রামের একদিকে বিশাল এলাকাজুড়ে বুলডোজারে ধূলোয় মিশিয়ে দেয়া রোহিঙ্গাদের পোড়া ঘর-বাড়ির ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা চিহ্ন, অন্যদিকে গড়ে উঠছে ছোট ছোট ঘর-বাড়ি। ঘরগুলো তৈরি হচ্ছে সেনাবাহিনীর সহায়তা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে। প্রতিটি ঘর তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে মাত্র সাড়ে চার শ’ মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে ৬৪টি ঘর। ২৫০ জনের মতো রাখাইন পরিবার এসে ঠাঁই নিয়েছে সেখানে।

 

এতদিন কেন আসনি? এখন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বার্তা সংস্থা এএফপিকে চিট সাইন ইয়েইন বললেন, ‘‘আমরা আসলে ওই কালাদের (রোহিঙ্গা) ভয় পেতাম। তাই এতদিন এখানে আসার কথা ভাবতেই পারিনি। কিন্তু এখন তো ওরা নেই, তাই সুযোগ পেলাম।”

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, একসময়ের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত লোকালয়ে ‘মুসলিমমুক্ত এলাকা’ গড়ে তোলার জন্যই এভাবে পরিকল্পনামাফিক রাখাইনদের জন্য আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে। এ আশঙ্কা যে ভুল নয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল উ হ্লা স-এর কথায়। রাখাইন রাজ্যের এই সাংসদ এএফপিকে জানায়, ‘এই পুরো এলাকাটা মুসলিমদের ছিল। সেনা অভিযানের পর তারা পালিয়ে গেছে। তাই এখন এখানে রাখাইনদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

 

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বর্বর সেনা অভিযানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মুখে-মুখে রাজি হলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রথম ধাপে ৮০৩২ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তাদের বিস্তারিত তথ্য মিয়ানমার সরকারের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু মিয়ানমার জানিয়ে দেয়, ৮০৩২ জনের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব। দেশটির দাবি, বাকিরা যে মিয়ানমারের নাগরিক, তার উপযুক্ত তথ্য দিতে নাকি ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment