সারিয়াকান্দিতে ১টি সেতুতেই বদলে যাবে ৫গ্রামের ১০হাজার মানুষের জীবন যাত্রার মান

সারিয়াকান্দিতে ১টি সেতুতেই বদলে যাবে ৫গ্রামের ১০হাজার মানুষের জীবন যাত্রার মান

তাজুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের বাঁশহাটা খালের ওপর ১টি ব্রীজ নির্মাণ হলেই বদলে যাবে ৫ গ্রামের ১০হাজার মানুষের জীবনযাত্রার মান। এখানে বাঁশ কিংবা কোন রকমের সেতু না থাকায় ৫টি গ্রামের কোমলমহি শিশু সহ ১০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। গ্রামবাসীর যাতায়াত ও উৎপাদিত পণ্য বাজার জাতের সুবিধার্থে ওই খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেতু নির্মাণ না হওয়ায় নৌকাযোগে কিংবা হাঁটু পানি ভিজে যাতায়াত করতে হচ্ছে অবহেলিত সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোকে।

সরেজমিনে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। বর্ষার সময় নৌকা দিয়ে যাতায়াতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়ে। খালের দক্ষিণ পার্শ্বে বাঁশহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর পার্শ্ববর্তী ছাইহাটা গ্রামে ছাইহাটা ডিগ্রী কলেজ, ছাইহাটা দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ছাইহাটা দাখিল মাদ্রাসার রয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার ত্রুটির কারনে প্রতিষ্ঠানগুলো ছেলেমেয়ে পড়ালেখা করতে পারছে না।

শুধু তাই নয়, বর্ষা মৌসুমে অনেক শিশুই নদীর পারাপারের কারনে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারেনা। গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধ বাচ্চু প্রামাণিক ও স্থানীয়রা জানান, বৃটিশ আমলে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ এই আমতলা-বাঁশহাটা সড়ক হয়ে বগুড়া জেলা শহরে যাতায়াত করতো। সড়কটি ৮০-৯০ লিং রেকর্ডের অর্ন্তভূক্ত ছিল। তখন এর নাম ছিল জেলা বোর্ডের সড়ক। গরুর গাড়ী দিয়ে মালামাল বহন করা হতো। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় ওই গ্রামের পাশ দিয়ে খালের সৃষ্টি হয় এবং ওইস্থানে নির্মিত বাঁশহাটা গ্রামের ফকিরের বাড়ির নিকট একটি কালভার্ট বিধস্ত হয়। এরপর থেকে ওই সড়কে নতুন কোন সেতু নির্মাণ করা হয়নি ।

বাঁশহাটা গ্রামের লাল মিয়া মন্ডলের স্ত্রী কাজলি বেগম বলেন, গত বন্যার সময় আমার মেয়ে তাসলিমা গর্ভবতী। হঠাৎ প্রসব বেদনা উঠে। হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বহু কষ্টে একটি ভ্যানগাড়ী সংগ্রহ করি। কিন্তু বাড়ীর সামনে খাল থাকায় গাড়ী বাড়ি পর্যন্ত আসেনি। পরে মেয়েকে কাঁধে করে খাল পার হয়ে বগুড়া শহরের হাসপাতালে নেওয়া হয়। ব্র্যাক কর্মী হেলেনা খাতুন বলেন, আমি এইগ্রামে গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টির ক্লাস নেই। সেতু না থাকায় অনেক পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। বাঁশহাটা গ্রামের কৃষক ইয়াছিন আলী, আলাল মন্ডল, লাল মিয়া বলেন, প্রতি বছর বাঙালি ও যমুনা নদীর বন্যায় উক্ত খালে পানি জমে। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থাও নেই। বহুদিন থেকে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মো. রুবেল উদ্দীন বলেন, আমার ইউনিয়নের গ্রামীণ রাস্তাগুলোয় বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণের আবেদন প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) জমা দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে বাঁশহাটা ফকিরের বাড়ীর নিকট জরুরী ভিত্তিতে সেতু নির্মাণ খুবই প্রয়োজন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment