গাজীপুর ও খুলনায় সেনা ছাড়া ভোট সুষ্ঠু হবে না: রিজভী

গাজীপুর ও খুলনায় সেনা ছাড়া ভোট সুষ্ঠু হবে না: রিজভী

গাজীপুর ও খুলনা দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না বলে একজন নির্বাচন কমিশনার সিদ্ধান্ত দেয়ার পরদিন বিএনপি ‘সুষ্ঠু ভোটের স্বার্থে’ সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে।

দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তোলা রুহুল কবির রিজভী বলেন, সুষ্ঠু ভোট করতে হলে এর বিকল্প নেই। আর সেনা মোতায়েন না করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামেরও সমালোচনা করেন তিনি।

রবিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আগামী ১৫ মে এই দুই মহানগরে ভোটকে সামনে রেখে আজ প্রার্থী বাছাই করতে বৈঠক ডেকেছে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে জমা দিতে হবে এই প্রার্থিতা।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের পাঁচ মহানগরে হবে ভোটের লড়াই। এর মধ্যে সবার আগে হচ্ছে গাজীপুর ও খুলনায়। রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটে রোজার পর ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।

এই ভোটকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বিএনপি। তারা নির্বাচনে জিতে তাদের পক্ষে জনসমর্থনের প্রমাণ দিতে চায়।

আর প্রতিটি নির্বাচন আসলেই সেনা মোতায়েনের দাবি তোলা বিএনপি এই ভোটেও একই দাবি তুলল।

কেন সেনা দরকার-এই ব্যাখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে সরকারের দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করছে। তাই তাদের পক্ষে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভয়মুক্ত ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ভোটাররাও তাদের ওপর আস্থাশীল হতে পারবেন না।’

‘বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে হলে সেনা মোতায়েন অত্যাবশ্যক।’

দুই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক হারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে দাবি করে তা বন্ধ করে ‘নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির’ জোর দাবিও জানান রিজভী।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আদৌ দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু চায় কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে।’

‘নির্বাচন কমিশনের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্যে সরকারি ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায়। নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি না করে, সরকারি ফর্মূলায় নির্বাচন করতেই ইসি আগাম মন্তব্য দিলেন কিনা সে প্রশ্নটি এখন ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে।’

রিজভীর অভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দুই সিটিতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও সন্ত্রাসীদের হাতে হাতে বৈধ অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

‘দুই সিটিতে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল করছে, মিটিং করছে, সমাবেশ করছে বীরদর্পে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সভা-সমাবেশ দূরের কথা বাড়িতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছে না। বিএনপি নেতাকর্মীদের জীবন কাটছে হয় জেল খানায় না হয় আদালতের বারান্দায় বারান্দায়।’

বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সব নেতার বিরুদ্ধে ৩০ টি থেকে শতাধিক ‘রাজনৈতিক’ মামলা রয়েছে বলেও দাবি করেন রিজভী। বলেন, ‘সারাক্ষণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তাড়া করছে।’

সব দল না এলে নির্বাচন ভালো হয় না-সিইসির এমন বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তাহলে সিইসির প্রধান দায়িত্ব যে কোনো নির্বাচনে সব দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা।’

‘সেক্ষেত্রে সরকার যদি সিইসির প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার মতো আচরণ করতে চায় তাহলে তিনি নিজ নীতিতে অটল থেকে শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বে সাহসী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। প্রয়োজনে সরকারের অন্যায়ের চাপের প্রতিবাদে পদত্যাগ করবেন তাতে দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, আতাউর রহমান ঢালী, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment