শাবি শিক্ষার্থীদের ধর্মঘটে ছাত্রলীগের বাধা

শাবি শিক্ষার্থীদের ধর্মঘটে ছাত্রলীগের বাধা
সিলেট প্রতিনিধি :
কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের নির্যাতনের ঘটনায় দিনব্যাপী  ছাত্র ধর্মঘট আহ্বান করলেও বাঁধার মুখে তা পালন করতে পারেনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তবে ধর্মঘট পালন না করতে পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা।  ছাত্রলীগ ও সেখানে অবস্থান নিয়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেয়ার কথা ছিলো আন্দোলনকারীদের। তবে ভোর ছয়টা থেকেই শাহপরান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে শাখা ছাত্রলীগ নেতারা অবস্থান নেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের উদ্দেশ্যে যাতায়াতকারী প্রত্যেককে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ব্যনারও কেড়ে নেন ছাত্রলীগ নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সিলেট বিভাগীয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সম্বন্বয়ক নাসির উদ্দিনকে হল থেকে বেরুতে দেননি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তার ফোনও রেখে দেন তারা।
হলে থাকেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন করেন এমন শিক্ষার্থীদেরকেও জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রধান ফটকে আসতে বাঁধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রধান ফটকে অবস্থান নিলে তাদেরকে ফটক থেকে উঠিয়ে দেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুসÍাকিম আহমেদ মোস্তাক, তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান। পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন এসে তার আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী, বিশেষ করে তার বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।
সকাল ছয়টা থেকে এ ঘটনা ঘটলেও সেখানে নয়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো শিক্ষক আসেননি। পরে নয়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির শিক্ষকগণ আসেন।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী এনএইচ খন্দকার জানান, তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে চাইলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনবরত তাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন।
শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে আন্দোলন করার অধিকার কারো নেই। তাই আমরা তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, এ আন্দোলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থণ আছে। কোটা প্রথার সংস্কার আমরাও চাই।কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশে তারা এ আন্দোলনে অংশ না নিয়ে বাধা দিচ্ছেন।
এদিকে আগের দিন ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ায় সকাল দশটা পর্যন্ত বেশীরভাগ বিভাগেরই পূর্বঘোষিত ক্লাস ও টার্ম পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে বিভিন্ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের ওপর রোববার রাত থেকে একের পর এক হামলা সংঘর্ষে জড়িয়েছে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন। এতে অন্তত ১১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সে ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ধর্মঘট ডেকেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment