রাজৈরে যুবক পরকীয়ার বলি: হত্যার বিচারের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা: দশ দিন হতে চললেও মূল হত্যাকারি ধরা ছোয়ার বাহিরে

রাজৈরে যুবক পরকীয়ার বলি: হত্যার বিচারের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা: দশ দিন হতে চললেও মূল হত্যাকারি ধরা ছোয়ার বাহিরে

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
রংপুরের রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যা রেশ কাটতে না কাটেতেই এবার মাদারীপুরের রাজৈরে এক সন্তানের জনককে পরকীয়ার বলি হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীর বাবার বাড়িতে ডেকে পরিকল্পিতভাবে রানা মৃধা নামের ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবার দাবী করেন। ঘটনার পর স্ত্রী ও শ্বশুড়ীকে স্থানীরা হাতে-নাতে ধরে পুলিশে সোর্পদ করে। তবে ঘটনার এক সপ্তাহ হতে চললেও মূল হোতা এখনো ধরা ছোয়ার বাহিরে। এতে ফুঁসে উঠেছে নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা। অতি দ্রুত মূল হোতাকে গ্রেফতার করা না হলে বৃহৎ আন্দোলনের হুমকি স্থানীয়রাদের। আর প্রশাসন, আসামীদের গ্রেফাতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবী পুলিশ কর্মকর্তার।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের আক্কাস মৃধার ছেলে রানা মৃধার সাথে পাশ^বর্তী সাতারিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর খোন্দকারের কলেজ পড়–য়া মেয়ে মাফুজা খন্দকার পিপাসার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায় উভয় পরিবারের সম্মতিতে বছর দু’ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এ নিয়ে শশুড়বাড়ী বেড়াতে গেলেই প্রায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। গত ৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতে রানা শশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে আবারো তাদের মধ্যে কলহ হয়। পরে শনিবার সকাল ১০টার দিকে রানার স্ত্রী তার শ্বশুড়কে ফোন দিয়ে রানা ফাঁস দিয়ে মারা গেছে বলে জানান। পরে স্থানীয় জনতা স্ত্রী ও তার মাকে হাতে-নাতে ধরে পুলিশে সোর্পদ করে।
নিহত রানার পিতা আক্কাস মৃধা জানান, ‘আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে রানার স্ত্রী মাফুজা খন্দকার পিপাসা, তার বাবা জাহাঙ্গীর খোন্দকার ও তার শ্বশুড়ি জড়িত। ওরা পরিকল্পিতভাবে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।

রানার মামি সুমা বলেন,আমার ভাগ্নাকে গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় নিচে পেয়েছি। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
জানা গেছে, রানার এক বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে। তবে রানার স্ত্রী সাথে এরই মধ্যে অন্য একটি ছেলে পরকিয়া রয়েছে বলে প্রায়ই রানার সাথে ঝড়গা-বিবাদ লেগেই থাকতো। এরই জের ধরে রানা মৃধাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করেছে রানার আত্মীয়-স্বজনরা। এলাকাবাসী হত্যার বিচারের দাবীতে ফুঁসে উঠেছে। তারা রানা হত্যার বিচার দাবী করেন।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শশাঙ্গ চন্দ্র ঘোষ জানান, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে রানার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাদারীপুর মর্গে ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে অল্প দিনের মধ্যেই মূল প্রতিবেদন দেয়া হবে
রাজৈর থানার ওসি (অপরেসন্স) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, এই ঘটনায় রানার মা রাজৈর থানায় তিনজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা করেছে। এরই মধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী রানার শ্বশুর জাহাঙ্গীর খোন্দকারকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রংপুরের বিশেষ আদালতের পিপি রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে পরকিয়ার জেরে হত্যার পর মাদারীপুরের এই ঘটনা বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। দোষীদের কঠোর বিচারের দাবী সচেতন মহলের।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment