বন্দী শেখ হাসিনা তো স্কয়ারে গিয়েছিলেন: নজরুল

বন্দী শেখ হাসিনা তো স্কয়ারে গিয়েছিলেন: নজরুল

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্দী থাকা শেখ হাসিনা বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে চিকিৎসা করিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন নজরুল ইসলাম খান। আর এখন তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কেন ইউনাইটেডে নেয়া যাবে না, তা জানতে চেয়েছেন তিনি।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ‘প্রতিবাদ সভায়’ এই প্রশ্ন তোলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। গত ২৮ মার্চ থেকে তার অসুস্থতার গুঞ্জন ছড়ায়। আর ৩০ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানায় বিএনপি।এ নিয়ে রাজনৈতিক গুঞ্জন ছড়ালে বিএনপি অবস্থান পাল্টে খালেদা জিয়াকে অভিজাত বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে ভর্তি করার দাবি তুলছে।

২৮ এপ্রিল বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে এসে তিন জন চিকিৎসকের একজন দাবি করেছেন, খালেদা জিয়া প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার পথে আছেন।অন্য একজন চিকিৎসক দাবি করেছেন, বিএনপি নেত্রী অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। আর একজন দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার প্রস্রাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেডে নিয়ে যাওয়ার দাবি নিয়ে গত ২২ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান ও হাফিজউদ্দিন আহমেদ।

নজরুল বলেন, ‘যখন শেখ হাসিনা কারাগারে ছিলেন তখন স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা যারা বড় বড় কথা বলছেন তারা পিজি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন দিনের পর দিন। অথচ বেগম খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেয়া হচ্ছে না।’সম্প্রতি কারাগারে বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা তুলে ধরে নজরুল বলেন, ‘আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে। কারণ আমাদের নেত্রী খুব অসুস্থ। তিনি বলছিলেন, তার পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা এবং হাত ও পা শক্ত হয়ে যায়। আর এগুলোর প্রচণ্ড ব্যথার কারণে তিনি ঘুমাতে পারেন না।’‘এমনিতে দেরি হয়ে গেছে। খোদা না করুন, তার সুচিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ার জন্য যদি উনার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় তাহলে জনগণ সরকারকে ক্ষমা করবে না।’

কারা কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে বেসরকারি হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার চিকিৎসা দেয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের আবেদন মানে হচ্ছে না কেন? শুধুই কষ্ট দেওয়ার জন্য।’সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে বিএনপির আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান নজরুল।‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এজন্য নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, জনগণকে সুসংগঠিত করুন। অধিক সংখ্যায় জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করুন। জনমতকে সুসংহত করুন। যাতে করে আমরা প্রয়োজনে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে পারি। এটাই আজকে সিদ্ধান্ত।’

গাজীপুরে জামায়াত নেতাকে আটকের নিন্দা

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচার চলার সময় মহানগর জামায়াতের আমির এস এম সানাউল্লাহকে গ্রেপ্তারেরও সমালোচনা করেন নজরুল।নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতের এই নেতা মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার দুই দিন আগে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা হয় আর সানাউল্লাহ ধানের শীষের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান।

গত ২৭ এপ্রিল ‘নাশকতার চেষ্টায়’ ‘গোপন বৈঠক’ থেকে পেট্রল বোমাসহ সানাউল্লাহ ছাড়াও জামায়াতের ৪৪ কর্মীকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার পর জামায়াতের আমিরকে নেতাকর্মীসহ গ্রেপ্তার করা হলো।’বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দীন খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, কৃষদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলিম হোসেন, সেলিম হোসেন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment