মুক্তি পাচ্ছেন আনোয়ার ইব্রাহিম: মাহাথির

মুক্তি পাচ্ছেন আনোয়ার ইব্রাহিম: মাহাথির

প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার পরপরই এক সময়ের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমানে কারাগারে অন্তরীন আনোয়ার ইব্রাহিমকে ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন মাহাথির মোহাম্মদ। এছাড়া তিনি ১০টি মন্ত্রণালয় নিয়ে ছোট আকারে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করারও ঘোষণা দেন।

গত বুধবার মালয়েশিয়ার ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে জয় পায় মাহাথির মোহাম্মদের জোট পাকাতান হারাপান। আর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার কারণেই হেরে যেতে হয়েছে এতদিন ক্ষমতায় থাকা নাজিব রাজাককে।

মাহাথির জানিয়েছেন, আনোয়ার ইব্রাহিম নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে তা কার্যকর করবেন দেশটির মালয়েশিয়ার রাজা ও রাষ্ট্রীয় প্রধান দ্য আগঙ্গ। ২০১৫ সালে সমকামিতার অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয় আনোয়ার ইব্রাহিমকে।

শপথের পর সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির বলেন, আমরা আনোয়ারকে ক্ষমা করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এটি হবে সম্পূর্ণ নিঃশর্ত। এর মাধ্যমে তিনি খুব দ্রুত ছাড়া পাবেন। তবে এ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানাননি মাহাথির।

আনোয়ার ইব্রাহিমের এটি দ্বিতীয় কারাজীবন। এর আগে রাজনৈতিক কারণে ১৯৯৮ সালে এই মাহাথির ক্ষমতায় থাকাকালীন তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিলো। রাজনৈতিক দুই প্রতিদ্বন্ধি হঠাৎ একত্রিত হওয়ার কারণেই নির্বাচনে জয়লাভ সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

নতুন সরকারের উপ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল। যিনি আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পিপলস জাস্টিস পার্টির নেতা। আজিজাহ মালয়েশির ইতিহাসে প্রথম নারী উপ-প্রধানমন্ত্রী।

আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত দশটি মন্ত্রণালয়েয়র মন্ত্রী নির্বাচনে জন্য শনিবার বৈঠকে বসবেন বলে জানান মাহাথির। তিনি বলেন, আমি বড় পরিসরে মন্ত্রিপরিষদ গঠন না করে ছোট করে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করবো।

এছাড়া দেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে যেসব অর্থ পাচার হয়েছে সেগুলোও দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান টানা ২২ বছর দেশটির ক্ষমতায় থাকা এ প্রধানমন্ত্রী।

মালয়েশিয়া ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ৬০ বছরের বেশি সময় দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বারিসান ন্যাশনাল (বিএন)। এই দলের নেতা হিসেবে ১৯৮১ সাল থেকে টানা ২২ বছর প্রধানমন্ত্রিত্ব করেন মাহাথির। ২০০৩ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেন তিনি। তাকে বলা হয় বিশ্বের সফল রাষ্ট্রনায়কদের একজন।

সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নিজ দল ও সরকারের নানা কর্মকাণ্ডে বিরক্তি প্রকাশ করেন। শেষমেশ রাজনীতিতে ফিরে অবস্থান নেন নিজের আগের দল বিএন ও শিষ্য নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে। এই বিপরীত অবস্থানের কারণ হিসেবে মাহাথিরের বক্তব্য- যে রাজনৈতিক দল দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়, সেই দলে থাকা লজ্জার।

ভোটের ফল মেনে নিয়ে বার্তা দিয়েছেন দেশটিতে এত দিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি নিজের সফলতার জন্য গর্ব করেছেন। এ ছাড়া তাকে এত দিন সমর্থন দেয়ার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নাজিব। সূত্র: নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment