রাউজান থানা কর্তক মদ-ইয়াবা দিয়ে চালকদের হয়রানির অভিযোগ: এএসআই ফারুক ক্লোজ!

অামির হামজা রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

রাউজান থানা পুলিশ কর্তৃক মদ-ইয়াবা দিয়ে সিএনজি টেক্সী চালকদের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ধরনের কয়েকটি ঘটনার সত্যতাও মিলেছে। একাধিক ঘটনার কথা স্বীকার করেছে পুলিশ কর্তৃক ব্যবহৃত কয়েকজন সোর্স। রোববার (৩-জুন) সকালে স্থানীয় সিএনজি টেক্সী চালকরা পুলিশের অপকর্মের সাথে জড়িত তিন সোর্সকে আটক করেন। আটককৃতরা হলেন, রাউজান ইউনিয়নের কাজী পাড়া এলাকার আব্দুল শুক্কুরেরর পুত্র নাঈম (২৩), হরিষখান পাড়া এলাকার মো. আলীর পুত্র মো. মাসুদ (১৯) ও পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের আঁধার মানিক এলাকার ঠান্ডা মিয়া চৌকিদার বাড়ির মাহবুবুল আলমের পুত্র সাইমন (২০)। কয়েক শতাধিক সিএনজি টেক্সী চালক ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ গ্যাংকে আটক করতে সক্ষম হয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। আটককৃতদের দেয়া তথ্য মতে, রাউজান থানার এ.এস.আই ফারুক মিয়া তাদেরকে ইয়াবা ও মদ দিয়ে দেন। যাত্রী সেজে পরিকল্পিতভাবে সিএনজি টেক্সীতে ঢুকিয়ে দেন মদ কিংবা ইয়াবা। মদ বা ইায়াবা দেয়ার পর পুলিশকে গাড়ির নম্বর ও অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য জানিয়ে দেয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের হাতেনাতে ধরে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নেয়ার পর মুক্তিপন হিসেবে দাবি করা হয় লাখ টাকা। দর কষাকষিতে কেউ ৫০ হাজার, আবার কেউ তার চেয়ে কম টাকায় মুক্তি পেয়েছেন অনেকে। এমন এক ভুক্তভোগীর নাম দিদারুল আলম। তার চট্টগ্রাম ১১-৯৫৪৪ নম্বরের সিএনজি টেক্সীতে ইয়াবা দিয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের পর ১ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। থানায় দালালের মাধ্যমে দরকষাকষিতে ৫০ হাজার টাকায় তিনি ছাড়াপান। টক্সীর ড্রাইভার দিদারুল আলম বলেন, আমি খুব গরীব। শ্বশুড় বাড়ির স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে থানার এএসআইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত রাউজান থানার এএসআই ফারুক মিয়া বলেন, আমি এই ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত নয়, যাদেরকে আটক করেছে তারা কেউ আমার পূর্ব পরিচিত নয়। এএসআই ফারুকের মোটর সাইকেল নিয়ে নাঈম এলাকা দাবিয়ে বেড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, সেদিন থানায় নাঈম এসেছিল। মোটরসাইকেল চেয়েছিল তাই দিয়েছি। এরমানে সে আমার ঘনিষ্ট তা নয়। ঘুরে ফিরে একটি প্রশ্ন জম্ম দিয়েছে চালকদের হাতে আটক তিনজনকে কেন ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কেন তাদের পুলিশে সোফর্দ করা হলো না। এখন রাউজান থানা পুলিশ সহকারী পুলিশ সুপারের নির্দেশে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য আটক তিন ব্যাক্তিকে আটকের চেষ্টা করছে। রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহ বিকাল সাড়ে ৫টায় সাংবাদিকদের বলেন, মাদক বিরুধী অভিযান ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য একটি চক্র মনগড়া অভিযোগ তুলছে। তবে এএস আই ফারুক জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাত ৯টার দিকে রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার নুর নবী বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকায় এ এসআই ফারুক মিয়াকে ক্লোজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনা নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে সন্ধায় রমজান আলী হাট এলাকায় অবস্থান নেয়া সিএনজি টেক্সী চালকদের কাছে ছুটে যান রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহ। এসময় সিএনজি টেক্সী চালকরা পুলিশ বিরুধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম হোসনে রেজা বলেন, প্রত্যোক বিভাগে কয়েকজন খারাপ মানুষ থাকে। তবে আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। যদি জড়িত থাকে তাহলে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে।’ রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিএনজি টেক্সী চালকদের হাতে আটক থাকা ৩ সোর্স পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। পুলিশের ধারনা তাদের ছেড়ে দিয়েছে চালকরা। তবে তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment