ভুলে ভরা পরিচয়পত্র, সঠিক ভাবে কাজ করছেনা ল্যাপটপ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিশ মেশিন ।

 

কামরুল হাসান বাউফল সংবাদদাতা:
পটুয়াখালীর বাউফলে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে নানা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। সঠিত
ভাবে কাজ করছেনা ল্যাপটপ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিশ মেশিন । স্মার্ট কার্ড পেতে অনেক সময়
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার কার্ড হাতে পাওয়ার পর দেখা গেছে, নানা অসংগতি। নামের ভুল ও
জন্ম তারিখ সঠিক নেই। পূর্বে সংশোধনের জন্য আবেদন করা হলেও তা সংশোধিত হয়নি। এর
ফলে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পেয়েও খুশি হতে পারেননি অনেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা স্মার্ট
জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের শুভ উদ্ধোধন করেন। এরপর ৯ জুন থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে
স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু হয়। ওই দিন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বাউফল পৌর শহরের
ভোটারদের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হবে। এর পর থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে
উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের মোট ২ লাখ ১২ হাজার ৬শ’ ভোটারের মধ্যে স্মার্ট কার্ট বিতরণ করা
হবে।
রবিবার সরেজমিনে পৌর শহরের বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা
গেছে, বিপুল সংখ্যক লোক উপস্থিত থাকা বলেও পরিচয়পত্র বিতরণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট তিনটি টিমের ২৫ জন কর্মী কাজ করছেন। এ
কাজের জন্য তাদেরকে ১৮টি ল্যাপটপ, ফিঙ্গার মেশিন ও আইরিশ মেশিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু
অধিকাংশ ল্যাপটপ ধীরগতির হওয়ায় সঠিক ভাবে কাজ করছেনা। আবার কাজ চলমান অবস্থায় হ্যাং
হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় চালু করতে রিস্টাট দিতে হচ্ছে। অনুরুপ অবস্থা ফিঙ্গার মেশিনেরও। সহসা
আঙ্গুলের ছাপ নিচ্ছেনা। অপারেটরকে মেশিনের উপর (স্বচ্ছগ্লাস) আঙ্গুল চেপে ধরে ছাপ নেয়ার
জন্য ধীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এর ফলে একজনের কাজ করতেই অনেক সময় লেগে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অপারেটর জানান, ২০০৮ সালে তত্তাবধায়ক সরকারের সময়
ল্যাপটপ, ফিঙ্গার ও আইরিশ মেশিন কেনা হয়। যে কারণে এগুলো পুরানো হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে
তা সঠিক ভাবে কাজ করছেনা। স্বল্প সময় কাজ করার জন্য দ্রুত গতির (হাই কনফিগারেশন) ল্যাপটপ
দরকার। অপরদিকে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর স্মার্ট জাতীয পরিচয়পত্র হাতে পাওয়ার পর অনেক ভোটাররা
খুশি হতে পারেননি। কারণ হিসাবে জানা গেছে তাদের পরিচয়পত্রে নামের ও জন্ম তারিখে ভুল করা
হয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকের স্থানীয় প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্রে সঠিক নাম লেখা
হয়নি। তার পূর্বের প্রদানকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম লেখা হয়েছে কামরুজ্জামান বাচ্চু,
কিন্তু স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম লেখা হয়েছে শুধু কামরুজ্জামান। ইংরেজী নামও লেখা
হয়েছে অনুরুপ। শহরের শাহী মসজিদ রোড এলাকার এক গৃহিনী অভিযোগ করেন, তার পূর্বে
প্রদানকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ছিল মোসাঃ পাপড়ি। তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
নাম সংশোধন করে এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট অনুযায়ী রুবিনা জাহান লিখলেও
স্মার্ট পরিচয়পত্রে পূর্বের নামই ছাপা হয়েছে। এ ভাবে আরও অনেকের পরিচয়পত্রে ভুল ধরা পরেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ সেলিম হোসেন বলেন, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রে
নাম ও জন্ম তারিখে ভুলের বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। যাদের স্মার্ট কার্ডে ভুল ধরা পরেছে,
তারা পুনরায় নিদৃষ্ট পরিমান টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়ে পরিচয়পত্র সংশোধন করতে
পারবেন।
১০/০৬/১৮
কামরুল হাসান

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment