নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সরেজমিন দেখা গেছে, সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা গ্রামের ভাষা শহীদ রফিক সেতু সংলগ্ন এই এলাকাতে, স্থানীয়রা কিছু বুঝে ওঠার আগে হঠাৎই শুরু হয় এই মাটি ভরাট কাজ। তবে শুধু নদী নয়, সরকারি খাস জমি সহ দখল করা হয়েছে ব্যক্তি মালিকানার জমিও। নামমাত্র মূল্য দিয়ে জমি বিক্রী করতে বাধ্য করা হয়েছে অনেককেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ভুক্তভোগীদের কয়েকজন এই প্রতিবেদকের নিকট জানিয়েছেন, এক শতাংশ জমিও রেজিষ্ট্রি হয়েছিলো না। বালু ফেলে সব কাজ শুরু করে দিয়েছে। মানুষের জমি-জমা জোর করে দখল করেছে। এমনকি জমির মালিকদের কাউকে জিজ্ঞেসও করে নাই এবং ক্ষতিপূরণও দেয় নাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোম্পানির কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে জমি দখলে সহায়তা করছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা। এ ব্যাপারে ঢাকা নর্দার্ণ পাওয়ার জেনারেশনের কারও বক্তব্য পাওয়া না গেলেও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নেতারা। এদের ভিতরে অন্যতম উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহিদ। তিনি বলেন, পাওয়ার প্ল্যান্ট সেখানে দখল করলো, বালি ভরাট করলো, এইসব বিষয়ে আসলে আমাদের কোনো ভূমিকাও নাই এবং আমরা জানিও না।
আরেকজন অভিযুক্ত জামির্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, এর সাথে জড়িত এসি ল্যান্ড অফিস, টিএনও অফিস, ডিসি অফিস এবং টোটাল সমন্বয়টা এদের। এরা যেহেতু দিছে তাই আমি মনে করি এটা বৈধ।
সম্প্রতি জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শণে এসে প্রশাসনকে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ নুরু ইসলাম মিয়া ঢাকা নর্দার্ণ পাওয়ার জেনারেশনের পরিচালক মোস্তফা মঈন, মানিকগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট লিঃ এর ইনচার্জ আশিকুছ সালাম, মানিকগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট লিঃ এর সাইট ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহিদ এবং জামির্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মোঃ নুরু ইসলাম মিয়া বলেন, মূলত এরা জমি দখলের চেষ্টা করছে। তাই সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই আমি তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করি।
তবে মামলার পরও প্রকল্পের কাজ চলছে পুরোদমে। যদিও তা বন্ধের আশ্বাস মিলেছে প্রশাসন থেকে। এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ যোবায়ের বলেন, পাঁচজন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি আছেন যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি এবং অনির্দিষ্ট আছে আরও অনেকে যারা ঐখানে কাজ করে। সুতরাং ওখানে কাজ করলে আমাদের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আটক করে নিয়ে আসবেন এমন নির্দেশনা দেয়া আছে।