তারিকুলের পাশে নিপীড়ন বিরোধী রাবির ১৪ শিক্ষক

আবু বকর অন্তু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারিকুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাবির সেই ১৪ জন শিক্ষক। শুধু তাই নয় আহত তারিকুলের পাশে থাকার জন্য সবার কাছে আহ্বানও করেন তারা। শনিবার সন্ধ্যায় এক লিখিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বিষয়টি জানানো হয়। এর আগে সেই শিক্ষকবৃন্দ চলমান কোটাসংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় যা সংবাদ সম্মেলন করে তাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। লিখিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চলমান কোটাসংস্কার আন্দোনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম তারিক মারাত্মক আহত হন। রাবির শিক্ষার্থীরা গত ২ জুলাই প্রধান ফটকের পাশে একটি পতাকা মিছিলের জন্য জমায়েত হলে ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। তরিকুলের উপরে চলে নির্মমতম অত্যাচার। তারিকুলের মাথা ফেটে যায় এবং পা ভেঙে যায়। আহত তারিকুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন চিকিৎসা চলার পর ৫ জুলাই অসুস্থ তারিকুলকে রামেক থেকে চিকিৎসা অসম্পন্ন রেখেই ছাড়পত্র দেয়া হয়। গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসাবঞ্চিত করার এই ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। এই পরিস্থিতিতে তারিকুলের সহপাঠিরা নিরুপায় হয়ে তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানকার চিকিৎসকরা তারিকুলের পায়ে অস্ত্রপচার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানায়। ৮ জুলাই বিকেল তিনটায় তারিকুল ঢাকায় পৌঁছালে সেদিনই, ঢাকায় আমাদের বন্ধুদের তত্ত্বাবধানে, তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসককে দেখানো হয়। চিকিৎসক জানান, যতো দ্রুত সম্ভব তারিকের পায়ে অস্ত্রপচার প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৯ জুলাই তারিকের পায়ে অস্ত্রপচার করা হয়। বর্তমানে তারিকুলের অবস্থা ভালোর দিকে ডাক্তারগণ মনে করেন, আর কয়েকদিন পরে তারিকুল ক্রাচে ভর দিয়ে একটু হাঁটাচলাও করতে পারবে। তবে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আরও অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করছি, যারা বিভিন্ন সময় তারিকুলের খোঁজ-খবর নিয়েছেন, বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন এবং উদ্বিগ্ন থেকেছেন তাদেরকে, এবং সর্বোপরি দেশের মানুষকে, তারিকের বিষয়টি জানানো দরকার। আমরা আশা করবো, সংশ্লিষ্ট সকলেই বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে। নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষকবৃন্দ: ১. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সেলিম রেজা নিউটন, ২. ইংরেজি বিভাগ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ৩. ফোকলোর বিভাগ ড. মোঃ আমিরুল ইসলাম, ৪. নৃবিজ্ঞান বিভাগ বখতিয়ার আহমেদ, ৫. ফোকলোর বিভাগ সুস্মিতা চক্রবর্তী, ৬. নাট্যকলা বিভাগ কাজী শুসমিন আফসানা, ৭. নাট্যকলা বিভাগ ড. হাবিব জাকারিয়া, ৮. বাংলা বিভাগ ড. সৌভিক রেজা, ৯. ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা, ১০. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ১১. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ কাজী মামুন হায়দার, ১২. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আব্দুল্লাহীল বাকী, ১৩. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ শাতিল সিরাজ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment