এইচএসসির ফলাফলে মাদারীপুর জেলায় শীর্ষে ‘মুষ্টিচাল ভিক্ষায়’ নির্মিত সেই এবিসিকে সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ

 

মোঃ ইব্রাহীম, মাদারীপুর প্রতিনিধি ॥
এবারও ফলাফলে মাদারীপুর জেলার শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে ‘মাসিক
মুষ্টিচাল’ ঘর ঘর থেকে ভিক্ষা করে প্রতিষ্ঠিত মাদারীপুরের প্রত্যন্ত
অঞ্চল কেন্দুয়ার এবিসিকে সৈয়দ আবুল হোসেন ডিগ্রী করেছে।
এবছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে শীর্ষ স্থানে থাকায় আনন্দিত
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। তবে এখনো ডিগ্রী শাখাটি
এমপিওভূক্ত না হওয়ায় চরম হতাশায় কলেজ নির্মানে সাথে জড়িত
এলাকাবাসী।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,
২০০৬ সাথে মাদারীপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত কেন্দুয়ার
কলাগাছিয়া গ্রামে নবজাগ্রত যুব সংঘের উদ্যোগে যাত্রা শুরু
করে ‘এবিসিকে কলেজ’। পরবর্তীতে কলেজটি নতুন নামকরণ করে
এবিসিকে সৈয়দ আবুল হোসেন ডিগ্রী কলেজ করা হয়। প্রতি
বছরই এইচএসসি ও ডিগ্রী পরীক্ষায় ফলাফলে শীর্ষে অবস্থান করে
কলেজটি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব-অসহায় মানুষের ছেলে-মেয়েরা এই
কলেজে শিক্ষকদের নিবিড় পর্যাবেক্ষণে পড়াশুনা করে। ফলে এবছরও
এইচএসসি পরীক্ষায় জেলার শীর্ষ অবস্থান করেছে। এবছর ১২৩ জন
শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১১৮ জন কৃতকার্য
হয়। যার মধ্যে প্রায় ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। অন্য কলেজের
চেয়ে শতকরা হিসেবে এবিসিকে সৈয়দ আবুল হোসেন
ডিগ্রী কলেজ প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এই ফলাফলে আনন্দিত
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। তবে কলেজের ডিগ্রী শাখাটি
এখনো এমপিওভূক্ত না হওয়ায় চরম হতাশ কলেজের সাথে জড়িতরা।
তারা দ্রুত এমপিওভূক্তির দাবী জানান।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীলিপ চন্দ্র বৈদ্য জানান, আমাদের কলেজে
শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা কলেজেই করানো হয়। শিক্ষকদের কঠোর
মনোযোগ আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এতো দূর আসতে পেরেছি।
বর্তমানে কলেজে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের ৩৮ শিক্ষক-
কর্মচারী মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো ডিগ্রী

শাখাটি এমপিওভূক্তি হয়নি। যে কারণে আমাদের বেশ কষ্ট পোহাতে
হয়। এমপিওভূক্তি হলে সদস্যার সমাধান হবে।’
কলেজে প্রভাষক অসীম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বরাবরের ন্যায় এবারও
আমাদের কলেজ এইসএসসিতে প্রথম হওয়ায় আমরা গর্বিত।
আমাদের কলেজের শিক্ষাদান পদ্ধতি আধুনিক। আর শ্রেণিকক্ষে
শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও মনোযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে
দেখা হয়। ফলে আমরা রেজাল্টে শীর্ষ অবস্থান করি।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ বৈদ্য নাদিম
জানান, ‘আমরা গ্রামবাসির মুষ্টিচাল ভিক্ষা নিয়ে কলেজটি
চালু করেছিল। এখনো গ্রামবাসী সহযোগিতা করে।
গ্রামবাসির সার্বিক উদ্যোগে কলেজটি এতো দূর আসতে
পেরেছে। সরকারের কাছে দাবী করবো, কলেজটি সরকারী করার। এতে
প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে-মেয়েরাও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে
পারবে।’
উল্লেখ্য, এবছর এইচএসসিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সরকারী
শেখ হাসিনা একাডেমী এন্ড উমেন্স কলেজে। তাদের পাসের হার
শতকরা ৯৪ ভাগ। এই কলেজ থেকে ২৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে
রাজৈর উপজেলায় প্রস্তাবিত সরকারী রাজৈর ডিগ্রী কলেজের
কোন ছাত্রই জিপিএ-৫ পায় নাই। পাসের হার শতকরা ৫০ ভাগ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment