গাজীপুর শ্রীপুরে বিষাক্ত ব্যাটারী কারখানা বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসুচি করে এলাকাবাসী।

সাগর আহামেদ মিলনঃ

গাজীপুর শ্রীপুর কেওয়া পুর্বখন্ড এলাকায় আজ বুধবার সকাল সাড়ে দশটার সময় গ্যালি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লি. ব্যাটারি তৈরীর কারখানাটি বন্ধের দাবীতে দুই বার মানববন্ধন করার পর আজ অবরোধ  কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধধন ও অবরোধ কর্মসুচিতে অংশ গ্রহণ করে এলাকার বিভিন্ন পেশাজীবির লোকজন ও কেওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাএ ছাএী ও আরো অনেকে। এলাকাবাসী জানায় কারখানায় সীসা গলিয়ে ব্যাটারী বানানো হয়। এ্যাসিড ব্যবহার সহ নানা ধরণের ক্যামিকেল ব্যবহারের ফলে আশেপাশের পুরো এলাকায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিষাক্ত কালো ধোয়ায় এলাকায় বিশেষ করে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ ফুসফুসের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।এবং কেওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাএ       ছাএী স্কুলে আসলে  অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখানে শেষ নয়  মরছে গবাদি পশু। একমাস যাবৎ বিষাক্ত এ কারখানাটি বন্ধের দাবী জানিয়ে আসছে এলাকাবাসীরা। এর আগে দু’বার মানববন্ধন করেছে তারা কিন্তু কারখানাটি বন্ধের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি প্রশাসন। তবে গত ৩১ জুলাই উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছিলো।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা কারখানাটির জরিমানা আদায়ের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তাদের দাবী কারখানা বন্ধের।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতার জানান, ওই কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ থাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গত ৩১ জুলাই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ সচেতন না হওয়ায় এলাকাবাসী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় এনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দ্রুত কারখানাটি সিলগালা করার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মো. আব্দুর রহিম,ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার নলদিঘী গ্রাম থেকে এসে বছর চার আগে কেওয়া পূর্ব খন্ড এলাকায় বাসা ভাড়া করে পরিবার নিয়ে থাকে। অসহায় আব্দুর রহিম অভাবের কারনে তার ১৪ বছরের ছেলে শাহেদকে এই ব্যাটারি তৈরীর কারখানায় চাকরিতে পাঠায়। কিন্তু হঠাৎ দুর্ঘটনায় সাহেদের ডান হাতের ৪টি আঙ্গুল কাটা পড়ে।

শাহেদ ও তার বাবা-মা এ অবরোধ ও ঘেরাও কর্মসূচিতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা জানায় তাদের সন্তানের এতো বড় ক্ষতি হলো  কারখানা থেকে কোনো অনুদান বা সহযোগিতা পেলাম না। আমি  অভাবের তাড়নায় আমার শিশু ছেলেকে কাজে পাঠাই কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ আমার ছেলেকে দিয়ে ঝুকিপূর্ণ কাজ করানোর ফলে আমার ছেলের আঙ্গুল কাটা পড়লো। আমার ছেলে যাতে ভবিষ্যতে কিছু করে খেতে পারে এমন ব্যবস্থার দাবী করছি।

এ বিষয়ে  কারাখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment