চিলমারীর ভাসমান ডিপোতে তেলশূন্য কয়েক মাসের মাস থেকে কৃষকরা হতাশ

 মমিনুল ইসলাম বাবু ( কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ০৫.০৯.১৮

দিনের পর দিন মাসের পর মাস শুধু বাড়ছেই হতাশ আর হতাশায় পড়েছে কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্থারের মানুষ। বেকার হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা। কতৃপক্ষের নেই ব্যাথা। কে করবে এর প্রতিকার নেই যে কারো খেয়াল। কুড়িগ্রামের চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে অবস্থিত ভাসমান তেল ডিপো যমুনা ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের বার্জ দুটি প্রায় ৩ মাস ধরে তেলশূন্য রয়েছে। এতে হতাশায় ভুগছেন আমন চাষিরা সাথে সাথে বার্জ ও তেল বাজারের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ডিপো অনুমোদিত ২৩ জন ডিলার। শুধু তাই নয় তেল না থাকায় তার প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন স্থরের মানুষের মাঝেও। ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডিপো কর্মকর্তাদের অবহেলায় ডিপো দুটি তেলশূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যমুনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ১৬ জন ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ৭ জনসহ মোট ২৩ জন অনুমোদিত তেল ডিলার রয়েছেন। তারা ভাসমান তেল ডিপো থেকে সেচ মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে শতশত ব্যারেল তেল চিলমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেন। এদিকে বৃষ্টি না থাকায় এর চাহিদা আরো বেড়ে গেছে কিন্তু মাসের পর মাস বার্জ দুটি তেলশূন্য অবস্থায় পড়ে থাকায় ডিলারদের সাথে সাথে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরাও। খোঁজ নিয়ে যানা যায় যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ এর একটি জাহাজ সর্বশেষ ২৬ এপ্রিল/১৮ ইং ৫লক্ষ ৫০ হাজার লিটার তেল নিয়ে আসে, তা কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেলে আর কোন জাহাজ না আসায় ক’মাস থেকে তেল শূন্য হয়ে পড়ে ভাসমান তেল ডিপোটিতে। এদিকে মেঘনা ওয়েল কোঃ লিঃ এর ভাসমান তেল ডিপোটিও তেল শূন্য অবস্থায় রয়েছে কয়েকমাস ধরে। বর্তমানে যমুনা ও মেঘনা ভাসমান ডিপো দুটি তেলশূন্য হওয়ায় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে সড়কপথে তেল পরিবহন করছেন হাতে গোনা দু’চারজন ডিলাররা আর বাকি ডিলাররা চেয়ে আছেন কবে আসবে তেল। ডিলাররা প্রতি লিটার তেল ৬২ টাকা ৫১ পয়সায় ডিপো থেকে কেনেন। আর খুচরা বিক্রি হয় ৬৫ টাকায়। তেল না থাকায় তাদের ১ লরি অর্থাৎ ৯ হাজার লিটার তেল আনতে অতিরিক্ত পরিবহন ও শ্রমিক খরচ হয় প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার টাকা। যা প্রতি লিটারে প্রায় ১ টাকা ৭৫ পয়সা বেশি। সব মিলিয়ে ডিলারদের খরচ হয় ৬৪ টাকা ২৬ পয়সা। ফলে সবশেষে খুচরা ক্রেতাদের তেল কিনতে হচ্ছে ৬৭-৬৮ টাকায়। আবার কোথায় কোথায় তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ থেকে ৭২ টাকার বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা অতিরিক্ত লেনদেন হচ্ছে। এছাড়াও তেল সংকটের কারণে ডিলারদের হাতে থাকা দীর্ঘদিনের খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে ডিপো দুটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন খেটে খাওয়া প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। চিলমারী ভাসমান তেল ডিপো দুটিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা তেল বাজার জোড়গাছ বাজারে সরেজমিনে কথা হয় তেল ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম, মমিনুল, ধীরেন্দ্র নাথসহ অনেকের সঙ্গে তারা বলেন, বর্তমানে দূর থেকে তেল আনতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। রমনা নদী বন্দর ঘাটের খুচরা তেল ব্যবসায়ী নুর আমিনসহ কয়েকজন জানান প্রতিদিন এই ঘাট থেকে বেশ কিছু নৌকা রৌমারী, রজিবপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে ফলে শতশত লিটার তেল লাগে কিন্তু তেল সংকটসহ দুরদুরান্ত থেকে তেল আনার কারনে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রিম সময় ক্রেতাসহ নৌকার মাঝিদের সাথে প্রায় ঝগড়া লাগছে। মাছাবান্দা, শরিফেরহাট, থানাহাটসহ বিভিন্ন এলাকার আমন চাষিদের সাথে কথা হলে তারা জানান একে তো বৃষ্টি নাই তার উপর তেলও সঠিক ভাবে পাওয়া যাচ্ছেনা পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে। তেল ব্যবসায়ী নজির এন্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মাইদুল ইসলাম জানান, পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ি থেকে সড়কপথে তেল পরিবহন করলে লিটার প্রতি প্রায় ২ টাকা বেশি খরচ হয়। একই কথা জানালেন থানাহাট বাজারের তেল ডিলার সামিউল আলম সোহেল। এ ব্যাপারে চিলমারী ভাসমান ডিপো যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ এর ডিপো সুপার (ডিএস) তাফাজ্জল হক জানান আমরা যোগাযোগ করছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তেল সরবরাহ করলে বিতরণে কোনো বাধা নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment