‘ক্রিকেটারদের সংসার করাটা আরও সহজ’

তাঁর আড্ডায় হুটহাট করে চলে আসে নিজের দাম্পত্য জীবনের গল্প। স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর আবেগ-ভালোবাসা কতটা, আড্ডায় সেটি খুব একটা প্রকাশ করতে দেখা যায় না। কিন্তু স্বভাবসুলভ রসিকতায় যে গল্পগুলো বলেন, হাসতে হাসতে পেটে খিল লেগে যায়। এ হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই উপলব্ধি হবে, একটা মানুষ তাঁর স্ত্রীকে আসলেই কতটা ভালোবাসেন। হৃদয়ের দৃঢ় বন্ধন দিয়েই মাশরাফি বিন মুর্তজা-সুমনা হক জুটি ১২টা বছর কাটিয়ে দিলেন।

মাশরাফি-সুমনা হকের প্রেম, প্রেম থেকে পরিণয়ের গল্প লেখা হয়েছে বহুবার। মাশরাফি নিজেই হয়তো বলবেন, ‘১৩ বছর পা দিয়ে এ গল্প নতুন করে বলার আর কী আছে!’ এশিয়া কাপ খেলতে রোববার দল উড়াল দেবে আরব আমিরাতে। টুর্নামেন্টপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কত হালকা, কত গুরুতর বিষয়ে বলতে হলো অধিনায়ককে। সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষ দিকে হলো প্রশ্নটা। এখন তরুণ ক্রিকেটাররা যে উচ্ছৃঙ্খল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, সেখানে মাশরাফি অনুকরণীয় উদাহরণ। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একটা ‘স্ক্যান্ডাল’ সংবাদমাধ্যম খুঁজে বের করতে পারেনি! প্রশ্নকর্তা নিজেদের ‘ব্যর্থতা’ স্বীকার করেই প্রশ্ন করলেন, তিনি কীভাবে বিনি সুতোয় গেঁথে রেখেছেন আপন মানুষদের? একটু তারকাখ্যাতি পেলেই অনেক তরুণ খেলোয়াড়ের না কি মাথা ঘুরে যায়, তিনি কীভাবে মাথাটা ঠিক রেখেছেন? ক্রিকেটের সঙ্গে সংসারটা কীভাবে সমান্তরালে সামলে চলেছেন?

‘ক্রিকেটের সঙ্গে সংসার…আসলে যারা চাকরি করছে তাঁদেরও তো সংসার করছে। এখানে কঠিন কিছু নেই। পুরোটাই হচ্ছে একজন আরেকজনকে বোঝাপড়ার বিষয়। আমার তো মনে হয় চাকরিজীবীদের চেয়ে ক্রিকেটারদের সংসার করাটা আরও সহজ। আমাদের অনেক বিরতি থাকে, সুযোগ থাকে পরিবারকে নিয়ে সফর করার। এটা একজন চাকরিজীবী বা অন্যান্য পেশায় থাকে না। এটা যুগলদের জন্য আরও মজার, খেলাধুলা আসলে বন্ধনটা আরও শক্ত করে’—মাশরাফির কাছে এটাই হচ্ছে সুখী সাংসারিক জীবনের সহজ সূত্র।

জীবন নিয়ে পাগলামো, চোটজর্জর ক্যারিয়ার—মাশরাফির সবকিছুই স্ত্রী সুমনা সামলেছেন পরম ভালোবাসায়। ভালোবাসায় কমতি রাখেননি মাশরাফিও। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ থাকায় ইংল্যান্ড থেকে অনুশীলন ক্যাম্প ফেলে চলে আসা কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দেরিতে যাওয়া—কখনো কখনো খেলাও তুচ্ছ হয়ে গেছে মাশরাফির কাছে। ‘খেলাকে ভীষণ ভালোবাসি, কিন্তু জীবনে খেলাই তো সব নয়’—এটাই অধিনায়কের দর্শন। মাশরাফির ৫০, সুমনার ৫০ মিলিয়েই তাই দুজনের ‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট লাভ’ হয়েছে!

এবং মোস্তাফিজের জন্মদিন
দেশের ক্রিকেটে আজ আরও একটা শুভদিন। মোস্তাফিজুর রহমান পা দিলেন ২৩-এ। ‘কী আমার জন্মদিনের উপহার কই? পারফরম্যান্স ভালো না বলে উপহার পেলাম না, তাই তো?’—বাঁহাতি পেসারের রসিকতা। ঘটা করে জন্মদিন পালনে তাঁর আগ্রহ সামান্যই। তিনি আগ্রহী না হন, তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের তো আগ্রহের কমতি নেই। রাত ১২টা বাজতেই মিরপুরে মোস্তাফিজের বাসায় মিষ্টি-কেক নিয়ে হাজির শুভানুধ্যায়ীরা। ‘ভীষণ চমকে গেছি! এভাবে তারা কেক-মিষ্টি নিয়ে আসবে ভাবিনি! দোয়া করবেন সামনের দিনগুলো যেন ভালো থাকতে পারি।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment