ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) | মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. সালাউদ্দিন বাবু

ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) | মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. সালাউদ্দিন বাবু

https://youtu.be/Iuwp-mgvggw

ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনটি একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৮ সালে হাতছাড়া হওয়া আসনটি আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবার দখলে নিতে চায় বিএনপি। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন বিএনপির তিন নেতা। তাদের মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু। সাবেক এমপি এবং জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে স্থানীয় ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি। এ ছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশী তালিকায় রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান এবং পরিবহন ব্যবসায়ী ও সাভার উপজেলার বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন আহমেদ।

দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী এই তিন নেতাই বিভিন্ন দিবস কিংবা উৎসবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ডিজিটাল পোস্টারে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে। তবে সরকারি দলের চাপে অনেকটাই নীরবে কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা।

ঢাকা-১৯ আসনটি রাজধানী উপকণ্ঠের সাভার উপজেলার পাথালিয়া, ইয়ারপুর, বিরুলিয়া, সাভার, বনগাঁও, কাউন্দিয়া, শিমুলিয়া, ধামসোনা ও আশুলিয়া ইউনিয়ন এবং সাভার পৌরসভা নিয়ে গঠিত। সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের কাছে রেকর্ডসংখ্যক ভোটে পরাজিত হন। এর আগে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে এই আসনে (তৎকালীন ঢাকা-১২) এমপি নির্বাচিত হন ডা. সালাউদ্দিন বাবু। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এখানে বিএনপির এমপি হয়েছিলেন প্রয়াত নেয়ামতউল্লাহ সাবু। বাবুর বাবা প্রয়াত দেওয়ান ইদ্রিসও বিএনপির এমপি ছিলেন।

সালাউদ্দিন বাবু আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু করেছেন। বিগত দিনে তিনি এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এলাকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের কারণে সাধারণ জনগণের কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি তিনি দলে নিজের অবস্থানকেও সুসংহত করেছেন। মামলা-হামলা আর কারা-নির্যাতিত নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে সমান সহানুভূতি।

তার সমর্থকদের দাবি, এই আসনে ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর বিকল্প শক্তিশালী প্রার্থী নেই। এর ওপর গত নয় বছর আওয়ামী লীগের এমপিসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। এ ছাড়া নৌকার মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা ও গ্রুপিং থাকলেও বিএনপিতে বাবুর বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ।

এখানে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর (অব.) মিজানুর রহমান। ২০০৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরপরই বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ছিলেন আশুলিয়া থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক। ওয়ান-ইলেভেনে দল ও জিয়া পরিবারের প্রতি তার সমর্থন ও কার্যক্রমে সবার নজরে আসেন তিনি। তার অনুসারীরা জানান, দলের বর্তমান দুঃসময়েও এলাকায় বিএনপির রাজনীতিকে ধরে রাখতে সচেষ্ট রয়েছেন মেজর (অব.) মিজানুর রহমান। বিগত দিনে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় তার বিরুদ্ধে ১২টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। তিনবার কারাগারেও যেতে হয়েছে তাকে। ফলে আগামী নির্বাচনে তাকে প্রার্থী করা হলে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার প্রতি দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বিশেষ সহানুভূতি থাকবে।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু বলেছেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন তিনি। তার বিশ্বাস, দল তাকে ছাড়া এখানে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেবে না। কেননা এই আসনে তিনি দু’বার আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন। এরপরও যদি দল তার চেয়ে যোগ্য কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে দলের স্বার্থে তার পক্ষেই কাজ করবেন তিনি।

মিজানুর রহমান বলেন, আশুলিয়ার ধামসেনা ইউনিয়ন তার জন্মস্থান। আর এ ইউনিয়নেই ঢাকা-১৯ আসনের প্রায় অর্ধেক ভোটার। এসব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তাকে দেওয়া হলে তিনি এই আসনের বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন।

বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী পরিবহন ব্যবসায়ী ও সাভার উপজেলার চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাভারে আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপির ভোট অনেক বেশি। এ আসনটিকে বলা যায় বিএনপির ভোটব্যাংক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই উপজেলা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন। তাই দল থেকে তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনেও বিজয়ী হবেন বলে তার বিশ্বাস।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment