দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে নিজেদের কিছু ছাড় দিয়ে হলেও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য শিগগিরই হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, যদি কিছু ত্যাগ স্বীকার না করি তাহলে কখনোই বৃহত্তর ঐক্য হবে না। ওইসব ছাড় দিয়ে তাদেরকে একটা জায়গায় আসতে হবে। তারা সেই চেষ্টাই করছেন। পুরো জাতি এটাই চায়। তাই অন্য যারা আছেন তাদেরকেও এটা বুঝতে হবে- এই ঐক্য ছাড়া কোনো মুক্তি নাই।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল শনিবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সভার উদ্বোধন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বিশ্বাস করেন- অতি দ্রুত জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সমগ্র জাতি এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকে এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করবার জন্য আন্দোলন করবে।
পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে আদালত স্থানান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার বিচারের জন্য দ্রুততার সঙ্গে আদালত স্থানান্তর করে কারাগারে আনার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও মানবতাবিরোধী। এভাবে একটা কারাগারের মধ্যে কখনোই বিচার হতে পারে না। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি ভাইস চেয়ার?ম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আরেকটি সভায় মির্জা ফখরুল বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের জন্য সারাদেশে আগাম মামলা দিয়ে রাখা হচ্ছে। সারাদেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন এলে এসব মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হবে। এভাবেই ভয়াবহ মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে গোটা জাতিকে জিম্মি করা হচ্ছে।
২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ভিন্ন সুরে কথা বলছে- দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী লিখেছেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের লজ্জাজনক পরাজয় ঘটবে। এটাই বাস্তবতা।
আগামী নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ যখন হবে তখন নির্বাচন। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে; নির্বাচন কমিশন ভেঙে যোগ্য মানুষকে দিয়ে কমিশন গঠন করতে হবে ও নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। এগুলোর মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখেন মোস্তফা জামাল হায়দার, জাফর আহমেদের মেয়ে কাজী জয়া, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।