সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ১৪টি প্রশ্ন

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ১৪টি প্রশ্ন
গত ১০ দশ বছরের আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনিয়মের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সরকারকে উদ্দেশ করে ১৪টি প্রশ্ন তুলেছেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিকট জাতি জানতে চায়- বিগত ১০ বছরে ব্যাংক, বীমা লুটের টাকা গেল কোথায়? শেয়ারবাজার লুটের টাকা গেল কোথায় ? ব্যাংকে আমানতকৃত টাকার চেক দিয়ে মানুষ না পেয়ে ফেরত আসে কেন ? বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করেছে কে? এখনও কেন রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি? আর্থিক খাত ধ্বংস করল কে? কানাডাতে বেগম পল্লী ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে কারা? গত ১০ বছরে বিদেশে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে কারা? প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ জন নিরীহ মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে কার নির্দেশে? ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, হুমায়ুন কবির পারভেজ, সাইফূল ইসলাম হিরু, সুমন ও জাকিরসহ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করেছে কে? কালো কাচ ঢাকা মাইক্রোবাসগুলো কাদের? উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে যারা হত্যা করেছে তাদের তো আপনি নিশ্চয়ই চেনেন, কার নির্দেশে তাদের বিচার হলো না, মাফ পেয়ে গেলো? যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজমুলকে ক্রসফায়ারে হত্যাসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে কে? সর্বোপরি দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে বিতাড়নের নির্দেশ দিয়েছে কে?
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব প্রশ্ন করেন। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে বলেছেন- ‘খুনি, অর্থপাচারকারী এবং সুদখোরেরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে, জোট বেঁধে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেছেন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিবে। আসলে সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কাণ্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। তিনি পেছনে, ডানে-বায়ে যারা তাঁকে ঘিরে আছে তাদের দিকে তাকান না, শুধু তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কুৎসা রটাতেই ব্যস্ত থাকছেন।
তিনি বলেন, আসল জারিজুরি ফাঁস হওয়ার ভয়েই সরকার ক্ষমতা ছাড়ছেন না। সেজন্য দম্ভবলে সকলের মুখ বন্ধ রাখতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জাতীয় সংসদে পাশ করেছেন- যেটিকে জনগণ সন্ত্রাসী-আইনি বলেই মনে করে। কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাঁকে যখন অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তখন পূর্বের চিকিৎসাধীন নিয়ন্ত্রণে থাকা রোগগুলো ছাড়া অসুস্থ ছিলেন না। তাহলে এই পরিস্থিতি হলো কেন? কর্তৃপক্ষের অবহেলা, হয়রানী, অস্বাস্থ্যকর স্যাঁতসেতে বদ্ধ পরিবেশের মধ্যে তাঁকে দিনযাপন করতে হচ্ছে, যা একটি চরম নির্যাতন। এই নির্যাতন সহ্য করতে যেয়ে তাঁর পূর্বের অসুস্থতা এখন আরও গুরুতর রূপ ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য অনুযায়ী বেগম জিয়া গুরুতর রোগে অসুস্থ নন, তাহলে তারা কেন হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলেন? বোর্ড বিএসএমএমইউ অথবা বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যেন এক প্যারাডক্স তৈরি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment