ফানুসের রঙে রঙিন বান্দরবানে রাতের আকাশ

বান্দরবান প্রতিনিধি :

বশির আহমেদ পুরাতন রাজবাড়ী মাঠ আকাশে ফানুস বাতি। ছবি: বান্দরবান প্রতিনিধি বান্দরবানে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবে মেতেছে মারমা সম্প্রদায়েরা। উৎসবকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় রাজারমাঠে জমকালো আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের উদ্যোগে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধের স্মরণে লাল, সাদা, হলুদসহ বিভিন্ন রঙের শত শত ফানুস বাতি উড়ানো হয় আকাশে। ফানুসের রঙে রঙিন হয়ে উঠে বান্দরবানে রাতের আকাশ। প্রচলিত আছে বৌদ্ধধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধ এই আশ্বিনী পূর্ণিমায় তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিল। তাই আশ্বিনী পূর্ণিমার এই তিথিতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ফানুস বাতি বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করে। তিন মাস বর্ষাবাস (উপোস) থাকার পর পাহাড়ের মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসব পালন করে আসছে বলে জানিয়েছেন মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন। এদিকে আতশবাজি, আলোকসজ্জা এবং ফানুসের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে বান্দরবানের রাতের আকাশ। যেন রং লেগেছে পাহাড়ের আকাশে। ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে পাহাড়ীদের উৎসব হলেও প্রতিবছরের মতো এবারো বান্দরবান রাজারমাঠে ভিড় জমিয়েছিল স্থানীয় বাঙালিরাও। উৎসবস্থল পরিণত হয় যেন পাহাড়ি- বাঙালির মিলনমেলায় পরিণত হয়। উৎসব দেখতে রাজারমাঠে জড়ো হয়েছিল বেড়াতে আসা পর্যটকরাও। উৎসবের রঙে বর্ণিল এখন বান্দরবানের পাহাড়ি পল্লীগুলো। উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ধর্মীয় দেশনা দেন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ উচহ্লা ভান্তে। এ সময় অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি, চট্টগ্রামের ডিআইজি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সামরিক বেসামরিক ঊচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের মূল আকর্ষণ মঙ্গল রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। স্বর্গীয় সুন্দর দেবতার মূর্তির আদলে তৈরি করা বিশাল আকৃতির ময়ূর রথের ওপর একটি বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হয়। রথটি কেন্দ্রীয় বৌদ্ধবিহার থেকে রশি দিয়ে টেনে টেনে পাহাড়ি-অধ্যুষিত এলাকাগুলো ঘোরানো হয়। এ সময় বৌদ্ধ ধর্মের নর-নারীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বুদ্ধ মূর্তিকে। রাতের এ রথযাত্রা দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে উপচেপড়া ভিড় জমে যায়। রথটি উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়া ঘুরিয়ে মধ্যরাতে সাঙ্ধসঢ়;গু নদীতে বিসর্জন দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মংমংসিং জানান, ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে হচ্ছে মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। রথ বিসর্জনের মাধ্যমে বান্দরবানে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের মূল অনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও পাহাড়ি পল্লীগুলোতে উৎসব চলবে আরও কয়েক দিন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment