কৌশলে গড়ে তুলুন শিশুর পাঠাভ্যাস

অবসর পেলেই শিশু মেতে ওঠে গেমস, ইউটিউব, কার্টুন নিয়ে। মোবাইল ফোন কিংবা ট্যাবে তাদের তুমুল আগ্রহ। পড়তে বসলে মন পড়ে থাকে টিভির কার্টুনের দিকে। সত্যি বলতে কি আজকালকার শিশুরা বড্ড প্রযুক্তিপ্রেমী, কিন্তু পুরোটা দোষ কি শুধুই শিশুদের? একটু ভেবে দেখুন তো, আমরা বড়রাইবা শিশুদের কতটুকু সময় দিতে পারি?

বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে শিশুদের মধ্যে কল্পনার রঙিন জগৎ তৈরি হওয়ার সুযোগই হয়ে ওঠে না। তবে যুগের হাওয়া পুরোপুরি বদলে ফেলাও সম্ভব নয়। ইউটিউব, গেমস, টিভিতে কার্টুন, মোবাইল বা ট্যাবে ভিডিও থাকবেই। কিন্তু এসবের পাশাপাশি সন্তানের মধ্যে তৈরি করতে হবে বই পড়ার অভ্যাস।

শিশুদের কল্পনাশক্তি বাড়াতে এবং মনের বিকাশ ঘটাতে বইয়ের বিকল্প নেই। অবসরযাপনের জন্য এর চেয়ে ভালো সঙ্গী আর হয় না। সন্তানের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।

অক্সফোর্ড লারনিং-এর সৌজন্যে চলুন দেখে নেওয়া যাক শিশুর মধ্যে কীভাবে এই অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।

১. সন্তান ছোট থাকতেই নানা ধরনের বইয়ের সঙ্গে ওর পরিচয় করিয়ে দিন। আজকাল ছোটদের উপযোগী রঙিন বই পাওয়া যায়। সন্তান যখন একটু আধটু কথা বলা শিখবে বা নতুন জিনিস চিনতে শুরু করবে তখন ওর জন্য ফুল, ফল বা জীবজন্তুর ছবি দেওয়া বই কিনে দিন। শিশু যাতে বইয়ের ছবির সঙ্গে বাস্তবের মিল খুঁজে পায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

যেমন শিশুকে যখন কমলার ছবি দেখাবেন, তখন সম্ভব হলে ওর হাতে একটি কমলা দিন। শিশুকে যখন ঘুরতে নিয়ে বের হবেন তখন পাখি, ফুল ইত্যাদি চিনিয়ে দিন। বাসায় এসে সেগুলোর ছবি দেখান। এতে ছোটরা অনেক তাড়াতাড়ি শিখতে পারবে।

২. শিশুর মধ্যে ঠিক-ভুল বিচার করার ক্ষমতা কিংবা দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে গল্পের উদাহরণ টেনে আনুন। সন্তানকে নীতিকথা শোনান। এগুলো শিশুর সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

৩. শিশু যে কার্টুন দেখতে পছন্দ করে সেই কার্টুন চরিত্রের মধ্যে শিক্ষনীয় বিষয় আছে এমন বই তাকে কিনে দিন। শিশু এমন বই পড়তে উৎসাহ পাবে।

৪. শিশু একটু বড় হলে নানা রকম প্রশ্ন করে। ওর প্রশ্ন শুনে বোঝার চেষ্টা করুন কোন বিষয়ে সন্তানের আগ্রহ বেশি। সেই অনুযায়ী ওকে নানা ধরনের বই কিনে দিন।

৫. রোজ রাতে ঘুমানোর আগে গল্পের বই বা ছড়ার বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। সন্তান ছোট হলে আপনি পড়ে শোনান। সন্তানকে পুরো গল্পটা না শুনিয়ে ছবি দেখিয়ে পরের অংশটা ওর কাছে শুনতে চান।ওকে নিজের মতো করে বানিয়ে বলতে দিন। এতে ওর কল্পনাশক্তির বিকাশ হবে।

৬. শিশুকে উপহার কিনে দেওয়ার তালিকায় বই অবশ্যই রাখুন। মাঝে মাঝে সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে যান। ওকে নিজের ইচ্ছেমতো বই বেছে নিতে সুযোগ দিন। নিজে স্বাধীনভাবে বই বেছে বেছে কিনলে ওর বই পড়ার আগ্রহটাও বেড়ে যাবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment