সৌম্য-সাকিবের পর আউট মুশফিক, চাপে বাংলাদেশ

আম্পায়ার তানভির আহমেদের বাজে সিদ্ধান্তেই সব শেষ। নো বলের ভুল কল দেন তানভির। রিভিউতে স্পষ্ট দেখা যায় থমাসের বলটি নো ছিল না। নো বলের ভুল কলের কারণে ক্যাচ আউট থেকে লিটন দাস বেঁচে গেলেও, সেই প্রভাব পড়ে সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের ওপর। অ্যালান ফ্যাবিয়ারের পরপর দুই বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সৌম্য ও সাকিব।

নো বলের বিতর্ক

ক্যারিবীয় পেস বোলার ওশান থমাম বল ডেলিভারি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নো বলের কল দেন আম্পায়ার তানভির আহমেদ। সেই বলে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। কিন্তু উইন্ডিজের অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েট ‘নো’ বলের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ করে রিভিউ চান।

রিভিউতে দেখা যায়, আসলে তা নো বল হয়নি। আর এই নো বলের সমস্যা নিয়ে খেলা নয় মিনিট বন্ধ থাকে। অনেক নাটকের পর আম্পায়ারের সেই সিদ্ধান্তই অটল থাকে।

রান আউট তামিম

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচে জিতলেই প্রথমবার কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তিন সিরিজের সবকটিতে জয়ের রেকর্ড গড়বে টাইগাররা। সেই মাইলফলকের ম্যাচে ১৯১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রান আউট হয়ে সাজঘরে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ২২ রানে ফেরেন তামিম। নির্ভরযোগ্য এই ওপেনারের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল।

মাহমুদউল্লাহদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ১৯০ রানে থামল উইন্ডিজ

মাত্র ৫ ওভারে ১ উইকেটে ৭৬ রান তুলে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, অনায়াসে ২০০ পার হয়ে যাবে সফরকারীরা। তবে শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজ, সাকিবের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ১৯০ রানে থামল তারা। বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ালো ১৯১।

এ ম্যাচে জিতলে ইতিহাস গড়বে টাইগাররা। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ জিতবে তারা। এর আগে কখনও টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সিরিজ জেতা হয়নি তাদের। এবার ষোলোকলা পূর্ণ করতে চায় স্বাগতিকরা।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটে দাপুটে জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৬ রানের জয়ে দুর্দান্তভাবে সিরিজে কামব্যাক করে বাংলাদেশ। ফলে ৩ টি-টোয়েন্টির সিরিজ রূপ নেয় ১-১ সমতায়। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় শিরোপা নির্ধারণী। এমন সমীকরণের ম্যাচে টস জিতে আগে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো সূচনা করে উইন্ডিজ। ফার্স্ট স্পেলে রেকর্ড ১ উইকেটে ৮৮ রান তুলে ফেলে সফরকারীরা। ১২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ঝড়ো ২৩ রান করে ফেরেন শাই হোপ। তাকে ফেরান সাকিব। এ পরিস্থিতিতে ঝড় তুলতে পারেননি কিমো পল। তাকে দ্রুত ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান।

তবে লুইস তাণ্ডব চলতেই থাকে। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে টাইগার বোলারদের রীতিমতো কচুকাটা করতে থাকেন তিনি। মাত্র ১৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা পঞ্চম দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড। অবশেষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ম্যাজিকে থামেন লুইস। তার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৩৬ বলে ৬ চারের বিপরীতে ৮ ছক্কায় ৮৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন বিস্ফোরক ওপেনার। তার সাইক্লোন থামিয়ে শিমরন হেটমায়ারকে সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ। বিধ্বংসী ব্যাটারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি।

ক্যারিবীয় ব্যাটিং ঝড়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত খড়কুটোর মতো উড়ে যান টাইগার অধিকাংশ বোলাররা। তবে পাথর হয়ে বসেন মাহমুদউল্লাহ। সতীর্থরা রানবন্যায় ভাসার মধ্যে দারুণ বোলিং করেন তিনি। প্রতিপক্ষের প্রথম ৫ উইকেটের ৩টিই শিকার করেন মিস্টার কুল। খানিক বাদে রোভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়ে দেন এ পার্টটাইমার।

পরে মাহমুদউল্লাহর দেখানো পথে হাঁটেন মোস্তাফিজুর রহমান। অল্প ব্যাবধানে ফিরিয়ে দেন নিকোলাস পুরান ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে। এতে রানের চাকা শ্লথ হয় উইন্ডিজের। নইলে আরামসে ২০০ পার হয়ে যেত তাদের। এর মাঝে ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ও শেরফান রাদারফোর্ডকে সাজঘরের পথ ধরেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তুলতে সক্ষম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের হয়ে মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজ ও সাকিব নেন ৩টি করে উইকেট।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment