হার্ট ব্লকের কথা গোপন রেখে নির্বাচনে ছুটে বেড়ান কাদের

হার্ট ব্লকের কথা গোপন রেখে নির্বাচনে ছুটে বেড়ান কাদের

মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অনেক আগেই। এরপরও জাতীয় নির্বাচনে ছুটে বেড়ান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলকে জেতাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এর আগেও তার হার্টে দুটি ব্লক ধরা পড়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কাউকে কখনো কিছু বলেননি। হার্ট অ্যাটাকের কথা গোপন করে কাজ করেছেন নিরবে।

এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় তিনি হেসে বলেছিলেন,‘আল্লাহ ভরসা। সামনে জাতীয় নির্বাচন। আগে নির্বাচন শেষ হোক তারপর না হয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রয়োজনে স্ট্যান্টিং, বাইপাস কিংবা ওপেন হার্ট সার্জারি করব।’

তিনি যে মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন কিংবা ব্লক ধরা পড়েছে সে তথ্যও মিডিয়া কিংবা অন্য কোথাও প্রকাশ করতে চিকিৎসকদের নিষেধ করেছিলেন ওবায়দুল কাদের। ওই সময় চিকিৎসকরা তাকে জোরে বক্তৃতা না করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ও প্রাত্যহিক জীবনযাপন এবং খাবার গ্রহণে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

বিএসএমএমইউর সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

জাতীয় নির্বাচন শেষ হলেও ওবায়দুল কাদের আর হাসপাতালমুখী হননি। মন্ত্রিসভা গঠনসহ নানা কাজে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিয়মিত হাঁটা চলা করলেও ডায়াবেটিস ছিল অনিয়ন্ত্রিত।

আজ অসুস্থ হয়ে পড়লে এনজিওগ্রাম পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে শতভাগ, একটি ৯৯ ভাগ ও একটিতে ৯০ ভাগ। চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে একটিতে রিং (স্ট্যান্টিং) পরান। আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে এ অবস্থায় রোগীকে তিনটি রিং কিংবা ওপেন হার্ট সার্জারি করা যায় না। তাই অন্য দুটিতে পরানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তার রক্তচাপ ক্রমশ কমে যাচ্ছে বলেও জানান চিকিৎসকরা।

ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কার্ডিওলজির অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান জানিয়েছেন, সেতুমন্ত্রীর তিনটি রক্তনালীতে ব্লক ধরা পড়েছে, যার একটি স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সকালে এনজিওগ্রামের পর ওবায়দুল কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তার হার্টে রিং পরিয়ে একটি ব্লক সচল করা হয়েছে। পরে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন- আগামী ২৪ ঘণ্টা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়। সেখান থেকে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে এনজিওগ্রাম শেষে ওবায়দুল কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment