ছাত্রলীগ নেতা থেকে ডাকসু ভিপি নূরুর উত্থান

ছাত্রলীগ নেতা থেকে ডাকসু ভিপি নূরুর উত্থান

নূরুল হক নূরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সন্তান নূরু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই মহসিন হলের আবাসিক ছাত্র। বরিশাল ইজমের রাজনীতির হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আসেন।

তৎকালীন মুহসিন হল সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। এদের নেতৃত্বে করা হলের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে উপ মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদকের দায়িত্বও পান।

এভাবেই শুরু…. নূরুল হক নূরুর উত্থান নিয়ে নানা কথা আছে। এনিয়ে নানাজনের আগ্রহও আছে। এজন্য তার উত্থান নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্টের প্রথম পর্ব আজ।

হল জীবনের শুরুতে মহসিন হলের গেস্ট রুমে ছিলেন নূরুল হক নূরু। মহসিন হলের এক্সটেনশন ভবনের ওই গেস্টরুমে তার রুমমেট ছিল একই ব্যাচের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী, যিনি পরবর্তীতে হল ট্রান্সফার করে অন্য হলে যান এবং সে হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির পদ প্রত্যাশী ওই নেতা বলেন, ‘নূরু আমার ব্যাচমেট ও গেস্টজীবনের রুমমেট। তার সঙ্গে আমি একসঙ্গে ৬ মাস ছিলাম।

একসঙ্গে নানা সময় ছাত্রলীগের নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। পরে সে হলের উপ মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক হয়। আমি হল ট্রান্সফার করে অন্য হলে গিয়েছি। সেখানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও হয়েছি।’

জানা গেছে, নূরুল হক ৭ জুন ২০১৫ ইং তারিখে মুহসিন হল ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

ছাত্রলীগের নেতা নূরুল হক নূরুর নানা কর্মসূচিতে তার সহযোদ্ধাদের ছবিও পাওয়া গেছে। তার সহযোদ্ধা মেহেদী হাসান সানির সঙ্গে তার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ছবি পাওয়া গেছে। সানি বর্তমানে মুহসিন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়া ওই হলের তৎকালীন ক্রীড়া সম্পাদক পরে কেন্দ্রের সহ সম্পাদক ইমরান জমদ্দারের সঙ্গেও একাধিক কর্মসূচিতে তার অংগ্রহণের ছবি আছে।

ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও মহসিন হলের সাবেক সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে স্বীকার করেন তিনি তার কমিটিতে নূরুকে নেতা বানিয়েছেন।

অপর স্ট্যাটাসে তিনি নূরুর উদ্দেশ্যে ফেসবুকে লিখেন, ‘নূরুল হক নূরু। ছাত্রলীগের কর্মী থেকে তোমাকে যারা নিজ স্বার্থে ছাত্র অধিকার আন্দোলনের নেতা বানিয়ে পল্টি দিয়ে শিবির নেতা বানালো তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর মত অবস্হান এবং সাহস তোমার কাছ থেকে প্রত্যাশা করি।

ছাত্রলীগ তার যত কর্মীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শিবির বানিয়েছে আমি বিশ্বাস করি তুমি তাদেরই একজন। ছাত্রশিবির করার মত যোগ্য তোমাকে দেখে যেমন কখনো মনে হয়নি তেমনি ছাত্রশিবিরকে প্রেস রিলিজ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কারও জন্য ভোট চাওয়ার মত নির্বোধও মনে হয় না। ভয় ও সংকীর্ণতা ভেঙে সত্যটা প্রকাশ কর ব্রাদার। সারা দেশকে জানিয়ে দে তোকে কোটা আন্দোলনের নেতা কারা বানিয়েছিল।’

জানা গেছে, হলের পরবর্তী কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে পদ বঞ্চিত হয় নূরু। এরপর নিস্ক্রিয় হয়ে যায় সে। সময়ের পরিক্রমায় ২০১৮ সালের দিকে সে বনে যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক। গতকাল হলেন ডাকসুর ভিপি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment