রাণীনগরে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ স্বজনদের ॥ শ্বাশুড়ী আটক ॥ স্বামী ও দেবর পলাতক

 স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ :

 নওগাঁর রাণীনগরে যৌতুকের দাবিতে মোছা: সাগরীকা বেগম নামে এক গৃহবধুকে স্বামীর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মিরাট উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও দেবর পলাতক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধুর শ্বাশুড়ীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে রাণীনগর থানা পুলিশ সাগরীকার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে ও ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছে। স্থানীয় ও গৃহবধুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার মিরাট উত্তরপাড়া গ্রামের শিবলু সরদারের সাথে আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামের মৃত ওসিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা: সাগরীকার ৪-৫ বছর আগে বিয়ে হয়। সাগরীকার দেড় দুই বছরের একটি ছেলে সন্তানও আছে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে তার স্বামী, শ্বাশুড়ী ও দেবর যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় ওই গ্রামে ৪-৫ বার শালিসও হয়েছে। গত বুধবার সাগরীকার স্বামী ঢাকায় থেকে বাড়ি আসে। মঙ্গলবার রাতে তার স্বামী সাগরীকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজিয়ে তার বাবার বাড়ির লোকজনদের খবর দেন। তার মা, ভাই ও বোনেরা এসে দেখে গলায় ফাঁস দেওয়াতো দুরের কথা তাদের বোন মেঝেতে শুয়ে আছে। সাগরীকার স্বজনদের অভিযোগ যৌতুকের দাবিতে সাগরীকাকে নির্যাতন করে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে মেরে ফেলে মেঝেতে রেখেছে। বুধবার সকালে রাণীনগর থানা পুলিশ সাগরীকার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধুর শ্বাশুড়ীকে আটক করেছে। গৃহবধু সাগরীকার ভাই মো: বাবলু রহমান , মা ও বোনেরা জানান, যৌতুকের দাবিতে সাগরীকাকে তার স্বামী, শ্বশুড়ী ও দেবর মিলে নির্যাতন করে মেরে ফেলে এখন আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে। আমাদের সাগরীকার স্বামী বলে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমরা এসে সাগরীকাকে গলায় ফাঁস দেওয়া দেখতে পাইনি। তার মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল। তারা সবাই মিলে সাগরীকাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই। রাণীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় গৃহবধূর শাশুড়ী শেফালী বেগম কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাগরিকার লাশ ময়না তদন্ত করার জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment