রাজধানীর কদমতলীর একটি বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে অগ্নিকাণ্ডে মা ও তার তিন শিশুসন্তান দগ্ধ হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে আগুনে ঘরের জিনিসপত্র পুড়লেও অক্ষত রয়েছে ঘরে থাকা পবিত্র কোরআন শরীফ। অলৌকিক এই ঘটনা ঘটেছে কদমতলীর গিরিধারা আবাসিক এলাকার এক বাড়িতে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কদমতলীর গিরিধারা আবাসিক এলাকার গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে দগ্ধ চারজনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দগ্ধ চারজন হলেন- ফাতেমা বেগম (৩৫) এবং তার তিন সন্তান রাফি (১১), ফারিয়া (৯) ও সাফওয়ান (৫)।
স্থানীয়রা জানান, ফতুল্লার গিরিধারা আবাসিক এলাকার বিসমিল্লাহ টুইনটাওয়ার ছয় তলা ভবনের চারতলায় আব্দুর রহিমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম এলপি গ্যাসের চুলায় রান্না করতে যান। এসময় ম্যাচের কাঠি জ্বালোনোর সঙ্গে সঙ্গে সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের কারণে পুরো ঘরে আগুন ধরে যায়।
স্থানীয়রা আরও জানান, আব্দুর রহিমের ঘরে তার সন্তানের বই খাতার পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শরীফ রাখা ছিল। বইখাতা ও ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে গেলেও কোরআন শরীফ অক্ষত আছে। কোরআন শরীফের কোন অক্ষরও পুড়ে নি।
গুরুতর দগ্ধ ফাতেমা বলেন, ‘রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজ ছিল। আমরা পাশের ঘর থেকে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ রান্না ঘরে বিস্ফোরণ হয়। গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর কিছু মনে নেই।
ফাতেমার স্বামী আবদুর রহিম জানান, তিনি একটি ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। তার মেয়ে ফারিয়া স্থানীয় ডিলাইট স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে এবং ছেলে রাফি পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সাইফুর রহমান জানান, ‘দগ্ধ ৪ জনের মধ্যে ৩ জনের প্রায় ৯৫ শতাংশ এবং একজনের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। রিকভার করা প্রায় অসম্ভব।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, চারজনেরই শরীর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। তাদের চারজনের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।