বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেই শপথ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত ৬ জন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন কিনা সেবিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। তবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেই দলটির নির্বাচিত প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন।

এবিষয়ে এখনো একমত রয়েছে দলটি। কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে। বিএনপির থেকে নির্বাচিত ৫জন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন কিনা সে বিষয়ে গত সোমবার এবং গতকাল মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীরা।

গত সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বিএনপি থেকে নির্বাচিত প্রার্থীরা কেউ এককভাবে কোনো কাজ করবেন না। অর্থ্যাৎ একা কেউ শপথ নেবেন না। যা করবেন ৬ জন মিলেই করবেন। অর্থ্যাৎ শপথ নিলে ৬ জন এক সঙ্গেই নেবে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া-৪ আসন থেকে বিজয়ী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা তো নির্বাচিত হয়েছি। তাই আমাদের এলাকার মানুষের প্রত্যাশা আছে যে, আমরা সংসদে যাই। আর আমরা সংসদে যেতে চেয়েছিলাম এবং যাওয়ার ইচ্ছেও ছিল। যদি আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিতো বা জামিন দিতো তাহলে বিষয়টি আমরা অবশ্যই ভেবে দেখতাম। তবে আমরা প্যারোলে মুক্তি চাই না। সুতরাং দল যদি মনে করে তাহলে আমরা সংসদে যাবো। অন্যথায় আমরা সংসদে যাবো না। আর দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমি কিছু করবো না।

খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে আপনারা সংসদে যাবেন- এবিষয়ে কি সরকারের কোন প্রতিনিধির সঙ্গে আপনাদের সমঝোতা হচ্ছে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে সরকারকে এই ম্যাসেজটা দিতে চাচ্ছি। আর সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।

শপথ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির টিকিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিজয়ী উকিল আবদুস সাত্তার বলেন, শপথ নেওয়ার বিষয়ে কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। এবিষয়ে এখনো দলীয় সিদ্ধান্ত হয় নাই।

শোনা যাচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দেওয়া হলে আপনারা শপথ নেবেন- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো আমাদের প্রথম শর্ত।

বিএনপির নির্বাচিত ৬ জন সংসদ সদস্যের বৈঠকের আলোচ্য বিষয় সর্ম্পকে জানতে চাইলে সাত্তার বলেন, বৈঠকে শুধু শপথের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে বিজয়ী জাহিদুর রহমান বলেন, দলের সিদ্ধান্ত কি হয়, সেজন্য এখনো আমরা দলের দিকেই তাকিয়ে রয়েছি। তাছাড়া এখনো যথেষ্ট সময় রয়েছে। তবে আমাদের নেত্রী জামিনে মুক্তি পেলেই আমরা শপথ নেবো। এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমরা সবাই একমত। কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে।

জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে বিজয়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা যে ৫ জন নির্বাচিত হয়েছি, তারা তো শপথ নিতে চাচ্ছি। কিন্তু দলে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেবো।

তবে ধানের শীষ প্রতীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত মো. হারুন উর রশীদ বলেন, বিএনপির থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। আর বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির থেকে নির্বাচিত ৫ জন্য সংসদ সদস্যকে বার্তা দিয়েছেন যে, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আপনারা কিছু করবেন না।

অপরদিকে এই ৫ জন ছাড়া বিএনপি থেকে খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে পরিচিত বগুড়া-৬ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির নির্বাচিত এক থেকে দুই জন প্রার্থী সংসদে যেতে চাচ্ছেন- এবিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এধরনের কোনো ইনফরমেশন আমাদের কাছে নাই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment