মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে আরও দৈর্ঘ্য বাড়তে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর। আগামী ২৩ এপ্রিল জাজিরা প্রান্তে আরেকটি স্প্যান বসানো হতে পারে। ১১তম স্প্যানটি ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হবে। স্প্যানটি বসানো হলে পদ্মা সেতুর এক হাজার ৬৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হবে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ২২ এপ্রিল ভাসমান ক্রেন দিয়ে জাজিরার দিকে স্প্যানটি নেয়ার কাজ শুরু হবে। পরদিন ২৩ এপ্রিল আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে স্প্যানটি বসানো হবে। সর্বশেষ ১০ এপ্রিল মাওয়া প্রান্তে ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের ওপর দশম স্প্যানটি বসানো হয়। এই স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু এখন এক হাজার ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যে রূপ নিয়েছে।২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত বছরের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। একই বছরের ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়। গত বছরের ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বসানো হয় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়। গত বছরের শেষ দিকে মাওয়া প্রান্তে চার ও পাঁচ নম্বর পিলারের ওপর একটি স্প্যান বসানো হয়। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের ষষ্ঠ স্প্যান বসে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর অষ্টম স্প্যান বসানো হয়। সেতুর ৩৫ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর গত ২২ মার্চ নবম স্প্যান বসে। মূল সেতুর ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৩টি পিলার সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও আটটি পিলারের নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া চীন থেকে খণ্ডিত অংশ আনার পর মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১০টি স্প্যান সংযোজনের কাজ শেষ হয়েছে। স্থান সঙ্কুলানের অভাবে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের জন্য নির্ধারিত স্প্যানটি জাজিরাতে একটি অস্থায়ী শেডে এনে রাখা হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাকি ২০টি স্প্যানের অংশ চীনে তৈরি হয়ে গেছে।দ্রুত কাজ এগিয়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা আশা করছে, ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হবে। পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেছেন, ১৫ মাসের মধ্যে পুরো সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। তার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাইয়ে পুরোপুরি দৃশ্যমান হওয়ার কথা পদ্মা সেতুর। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুতে মোট ২৯৪টি পাইল রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে ২৪৭টি পাইল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৪৭টি পাইলের মধ্যে ১৫টি পাইলের অর্ধেক বসানো হয়ে গেছে। ২৯৪টি পাইলে থাকবে মোট ৪২টি খুঁটি। দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পদ্মা সেতুর বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আপনি আরও পড়তে পারেন
-
বাস, লঞ্চ, ট্রেনে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ
রাত পোহালেই ঈদ, পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে মাতবে সারাদেশের মানুষ। তাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি... -
ঈদুল ফিতর: টানা ৫ দিনের ছুটিতে দেশ
এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার থেকে। খুলবে... -
বাড়তি ভাড়া চেয়ে হয়রানি করলেই কঠোর ব্যবস্থা : আইজিপি
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মাধ্যমে হয়রানির চেষ্টা করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা...