প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নির্বাচনে নিরপেক্ষ ছিল পুলিশ-প্রশাসন: এইচ টি ইমাম

আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম জানিয়েছেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশ পুরোপুরি নিরপেক্ষ-পক্ষপাতহীনভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করেছে বলে।

রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের নিজ দলের ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

উপজেলা নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেন, এ বিষয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন এবং এ বার্তাটি সবার কাছে চলে গেছে।

প্রশাসন এবং পুলিশ এরা কেউই নির্বাচনে কোনো প্রভাব তো খাটাবেই না বরং তারা একেবারে নিরপেক্ষ-পক্ষপাতহীনভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবেন। এ কাজটি তারা করেছেন এবং নির্বাচন কমিশন সে জন্য সন্তুষ্ট।

অনেক সংসদ সসদ্য নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট চেয়েছেন। এ নিয়ে দলের অনেকের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে বলে জানান এইচ টি ইমাম।

প্রধানমন্ত্রীর এ রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, আমরা আজকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করলাম। বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ আইনের শাসনে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল।

দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানসহ প্রচলিত সব আইন ও বিধি বিধানের প্রতি সবসময় আওয়ামী লীগ শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনে করি কেউ-ই আইনের ঊর্ধ্বে নই। রাজনৈতিক দলসহ দেশের সব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানেরই রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত সাংবিধানিক রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনের কাছে সব রাজনৈতিক দলের জবাবদিহিতা রয়েছে। আরপিও অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হয়।

সব সংসদীয় আসনের নির্বাচন শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এ হিসাব দাখিল করার বিধান রয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের ব্যয় নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেছি। দলের প্রার্থীরা আইনের বিধান মতে ইতিমধ্যে স্ব স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছেন।

‘২০০৮ সালের নির্বাচনে পর আওয়ামী লীগ সবার আগে নির্বাচনের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছিলো। ২০১৪ সালেও আমরা করেছি। এবারও আমরা যথাবিহিত করলাম। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের কথা, গর্বেরও কথা। কেননা, আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন করে চলেছে।

কত টাকা ব্যয়ের হিসাব জমা দিলেন, জানতে চাইলে এইচটি ইমাম বলেন, এটি এখন নির্বাচন কমিশনের সম্পত্তি। এটা পাবলিক ডকুমেন্ট, তাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন। ইসির ওয়েব সাইটেই পেয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালে নির্বাচনী ব্যয় কিছুটা বেড়েছিল। প্রতিবারই খরচ আরও বাড়েই। এবারে আমাদের একটি জিনিস উল্লেখযোগ্য- অন্যান্য বছর অনেক দলীয় প্রার্থীকেই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবারে আর সেটি করা হয়নি। সেদিক থেকে আমাদের ব্যয় কম। এবারে আমরা আয় পেয়েছি বেশি, অনেকেই অনুদান দিয়েছেন।

এইচটি ইমামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবীর কাউছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ টাকা। আর নবম সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ টাকা। একাদশ সংসদে ১ কোটি পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment