রূপগঞ্জ থেকে ৫০ লাখ টাকার টুপি যাবে মধ্যপ্রাচ্যে!

আর দিন কয়েক পর পবিত্র রমজানুল মোবারক। রমজান মাস ও ঈদকে সামনে রেখে রূপগঞ্জের টুপি পল্লীতে কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কারিগররা রাত-দিন টুপি তৈরি করছে। টুপি তৈরির কারিগররা সবাই নারী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবার প্রায় ৫০ লাখ টাকার টুপি মধ্যপ্রাচ্যে যাবে বলে টুপির মহাজনরা আশা করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার ডেমরা ঘেঁষা রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠেছে টুপি পল্লী। বছরের ১১ মাস এ পেশায় থাকলেও শবে বরাত ও রমজান মাস ঘনিয়ে আসলে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। এবারও রোযার আগেভাগেই টুপি কারিগররা টুপি তৈরি করে মহাজনদের নিকট তুলে দিচ্ছেন। রূপগঞ্জের তৈরি টুপি দেশের বাজার ছাড়িয়ে এখন ওমান, সৌদি, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেরদের মন কেড়েছে। অত্র ইউনিয়নের ১৬ গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ নারী ঘরে বসে মাসে আয় করছেন ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী, ছাতিয়ান, হরিানা,পাড়াগাও,মাঝিনা, নাওড়া, পূর্বগ্রাম, বড়ালু, পশ্চিমগাঁও, পূর্ব চনপাড়া, ভাওলিয়াপাড়া, কেওঢালা, খামারপাড়া, তালাশকুর, নগরপাড়াসহ ১৬টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার নারী কারিগর প্রতিনিয়ত টুপি তৈরী করে যাচ্ছে।

রফতানিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রচেষ্ঠায় টুপির বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। টুপির বাজার সম্প্রসারিত হওয়ায় বাড়ছে টুপির চাহিদা, বাড়ছে কারিগরের সংখ্যা। কায়েতপাড়া ইউনিয়নের এ গ্রামগুলো এখন এক কর্মমূখর জনপদ।

কথা হয় নগরপাড়া গ্রামের টুপি কারিগর রাহাতুর বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা বছর ব্যবসা অয়না। তয় রোজা আইলে টুপির কদর বাড়ে। তহন ব্যবসা ভালাই অয়। বড়ালু গ্রামের টুপির কারিগর গুলে নূর বেগম বলেন, অনেকে মহিলারা সারা বছরই বানায়। আমি রোজা আইলে বানাই। যা বানাই তার আয় দিয়া ঈদের একটা খরচ অইয়া যায়। ইছাখালী গ্রামের মাসুমা বেগম বলেন, এইবার চাহিদা আছে টুপির। আমাগো চোহে ঘুম নাই। দিনরাত টুপি বানান লাগতাছে।

কারিগররা বলেন, বাহারি নামের টুপি এখানকার কারিগররা তৈরী করে থাকেন। এর মধ্যে তারকা টুপি, হাফলং টুপি, বিস্কুট টুপি, মাকর টুপি, গিট্টু টুপি তৈরী হয় বেশী। একটি গিট্টু টুপি তৈরীতে খরচ পড়ে ৩০/৩২ টাকা। আর এ টুপি বিক্রি হয় চকবাজারে ৪৫/৫০ টাকায়। তবে কারিগররা ১৫/২০ টাকার বেশী পায়না। মাঝখানে মহাজন বা প্রতিনিধি এবং দাদন ব্যবসায়ীরা লাভের অর্ধেক অংশ নিয়ে নেয়। টুপির মহাজন আলী হোসেন বলেন, এবার ৪০ থেকে ৫০ টাকার টুপি দেশে ও দেশের বাইরে যাবে। এবার টুপির ভাল চাহিদা রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment