বিকেলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ

বিশ্বকাপের বহুল প্রতীক্ষিত লড়াইয়ে রোববার (১৬ জুন) মাঠে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের ম্যানচেষ্টারে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে স্টার ওয়ান, গাজী টিভি ও মাছরাঙা চ্যানেল।

চিরবৈরী এ দুই প্রতিবেশী দেশের খেলা মানেই বাড়তি উত্তেজনা, বাড়তি আকর্ষণ। সাম্প্রতিক এ দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে এ উত্তেজনা যেন আরো তুঙ্গে উঠেছে। আর এতে ঘি ঢালছে ভারত ও পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলের তৈরি বিজ্ঞাপন। যদিও বিশ্বকাপের মতো সবচেয়ে বড় আসরে ভারতের সঙ্গে কখনই কুলিয়ে উঠতে পারেনি পাকিস্তান।

এবারের বিশ্বকাপে ভারতের উড়ন্ত সূচনা আর অন্যদিকে ম্যাচ জিততেই যেন ভুলে গেছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে খেলা দুই ম্যাচের দু’টিতেই জিতেছে ভারত আর চার ম্যাচে কেবল একটি জয় পাকিস্তানের। বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালের স্বপ্ন জিয়িয়ে রাখতে পাকিস্তানের এই ম্যাচ জয়ের বিকল্প নেই। অন্যদিকে নিজেদের জয়ের ধারা অব্যহত রাখতে লড়বে ভারত।

আইসিসির প্রকাশিত সবশেষ র‌্যাংকিংয়ে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত ১২২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে আছে ২য় স্থানে আর ৯৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে পাকিস্তান। দু’দলের রেটিং পয়েন্টের পার্থক্যটা নেহাতই কম নয়। ভারতের থেকে চার ধাপ পিছিয়ে থাকা পাকিস্তানের সাথে রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য ২৯।

তবে ম্যাচটি যখন ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার তখন রেটিং পয়েন্ট কিংবা র‍্যাংকিংয়ের অবস্থান দিয়ে ম্যাচের গুরুত্ব বিশ্লেষণ হয় না। এ ম্যাচের উত্তাপটা কেবল দেখা মেলে খেলার ময়দানেই। যেখানে সমানে সমান লড়াই করে দু’দল। তবে বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের সাথে ঠিক যেন পেরে ওঠে না পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ছয় দেখার একবারও ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান।

ওয়ানডেতে ভারত-পাকিস্তান প্রথম মুখোমুখি হয় ১৯৭৮ সালে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪ রানে হারিয়েছিল ভারত। এখন পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে পাকিস্তান। ভারতের ৫৪ জয়ের বিপরীতে পাকিস্তানের জয় ৭৩টি। চার ম্যাচ পরিত্যক্ত। ভারত ৬-০ পাকিস্তান

বিশ্বকাপে ভারতের কাছে পাত্তাই পায় না পাকিস্তান। পরিসংখ্যান তাই বলে। ১৯৯২ সালে প্রথম সাক্ষাতে হারের পর আরো ৫ বার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। সর্বশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারায় ভারত।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এখনও পাকিস্তানের কাছে অজেয় ভারত। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালসহ ৫ ম্যাচেই জিতেছে ভারত।

দলীয় সর্বোচ্চ

বিশাখাপত্তমে ২০০৫ সালে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৫৬/৯ রান তোলে ভারত। ওয়ানডেতে দুদলের মধ্যকার দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। ম্যাচটিতে মহেন্দ্র সিং ধোনি ১২৩ বলে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলেন। ভারত জেতে ৫৮ রানে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৪৪/৮। করাচিতে ২০০৪ সালে ওই ম্যাচটিতে ৫ রানে হেরেছিল তারা। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬৯৩ রান হয়েছিল। যা দুদলের সর্বোচ্চ ম্যাচ এগ্রিগেট।

দলীয় সর্বনিম্ন

১৯৭৮ সালে শিয়ালকোটে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৯ রানে অলআউট হয় ভারত। দুদলের মধ্যকার দলীয় সর্বনিম্ন এটি। ম্যাচটিতে পাকিস্তান জেতে ৮ উইকেট। দু্‌ই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ১৬২ রান হওয়ায় এটি দুদলের সর্বনিম্ন ম্যাচ এগ্রিগেট। পাকিস্তানের সর্বনিম্ন ইনিংস ৮৭। মজার ব্যাপার হলো ১৯৮৫ সালে শারজার ওই ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত করেছিল মাত্র ১২৫ রান। ইমরান খান নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। পরে কপিল দেব-রবি শাস্ত্রী অল্প পুঁজি নিয়েও বিখ্যাত জয় ছিনিয়ে আনেন।

বড় জয়

২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকে ১৮০ রানে হারায় পাকিস্তান। রানের ব্যবধানে দুদলের মধ্যকার সবচেয়ে বড় জয়। রানের ব্যবধানে ভারতের বড় ১৪০ রানের। ২০০৮ সালে ঢাকায় এশিয়া কাপের ম্যাচে ওই জয় পেয়েছিল তারা। আর ভারত-পাকিস্তান উভয় দলই একবার করে ৯ উইকেটে জিতেছে। পাকিস্তানের জয়টি ১৯৯৭ সালে লাহোরে। আর ভারতের জয়টি গত এশিয়া কাপে।

ছোট জয়

১৯৭৮ সালে প্রথম সাক্ষাতে পাকিস্তানকে ৪ রানে হারিয়েছিল ভারত। ওটা রানের ব্যবধানে ভারতের ছোট জয়। ১৯৯১ সালে শারজায় ভারতকেও ৪ রানে হারায় পাকিস্তান। উইকেটের ব্যবধানে ছোট জয় পাকিস্তানের। ১৯৮৬ সালে শারজা ও ২০১৪ সালে ঢাকায় ভারতকে ১ উইকেটে হারায় পাকিস্তান। ২ উইকেটের ব্যবধানে তারা জিতেছে ৩ বার আর ৩ উইকেটে জিতেছে ৪ বার। ভারত ৩ উইকেটের ব্যবধানে পাকিস্তানকে এখন পর্যন্ত ২ বার হারিয়েছে।

বিশ্বকাপে পাকিস্তান স্কোয়াড

সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), বাবর আজম, ফখর জামান, হারিস সোহেল, হাসান আলী, ইমাদ ওয়াসিম, ইমাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ হাসনাইন, শাদাব খান, শাহীন শাহ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ আমির, ওয়াহাব রিয়াজ, আসিফ আলী।

বিশ্বকাপে ভারত স্কোয়াড

বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা, শেখর ধাওয়ান (ইনজুরির কারণে তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে), মহেন্দ্র সিং ধোনি, দীনেশ কার্তিক, বিজয় শঙ্কর, লোকেশ রাহুল, কেদার যাদব, হার্দিক পাণ্ডিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, মোহাম্মদ সামি, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব ও যুগবেন্দ্র।

আপনি আরও পড়তে পারেন