পুড়িয়ে ফেলতে দেন রেনুকে হত্যার দিনের পোশাক, ছদ্মবেশ নেন ন্যাড়া হয়ে

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন হৃদয় ওরফে ইব্রাহিম। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। হৃদয় জানান, ন্যাড়া হয়ে ছদ্মবেশ ধারণের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে রেনুকে হত্যার দিন পরা পোশাক নানিকে দিয়েছিলেন পুড়িয়ে ফেলার জন্য।

আজ বুধবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইস্ট ডিভিশনের ডেমরা জোনাল টিমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান এসব কথা জানান। যে পোশাক পরে রেনুকে পিটিয়ে খুন করা হয়, সেটি উদ্ধারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় নানির বাসা থেকে হৃদয়কে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত শনিবার সকালে বাড্ডার ওই স্কুলে নিজের মেয়েকে ভর্তির জন্য তথ্য সংগ্রহ করেতে যান রেনু। এ সময় ছেলেধরা গুঞ্জন উঠলে তিন নারীকে আটক করে স্থানীয়রা। এর মধ্যে দুই নারী পালিয়ে গেলেও গণপিটুনির শিকার হন রেনু। স্থানীয়রা তাকে রড, কাঠ দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করে।

রেনুকে পিটিয়ে হত্যার যেসব ভিডিও এখন পর্যন্ত প্রকাশ হয়েছে, সেখানে তিন/চার তরুণকে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ছিল নীল টি-শার্ট পরিহিত হৃদয়। হৃদয়ই রেনুকে পিটিয়ে হত্যার নেতৃত্ব দিয়েছিল। রেনু যখন বেধড়ক পিটুনি খেয়ে নিস্তেজ হয়ে স্কুল কম্পাউন্ডে পড়ে ছিল, তখনও থামেনি হৃদয়।

হাতে থাকা লাঠি দিয়ে রেনুর মুখে, বুকে, পেটে, হাতে ও পায়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে পিটিয়ে যাচ্ছিল সে। আশপাশের লোকজনের অনেকে ‘থামো থামো, আর মের না, মরে গেছে’ এসব বলে হৃদয়কে থামানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু, পাশবিক রূপ ধারণ করে সে তখনও রেনুকে প্রহার করে যাচ্ছিল।

হৃদয় উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকানে সবজি বিক্রি করেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। হৃদয়কে নিয়ে সাতজন গ্রেপ্তার হলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন