কক্সবাজারে এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট

কক্সবাজারে এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। হাটগুলোতে দিন দিন গবাদি পশু বাড়লেও ক্রেতার সমাগম কম। যারা আসছেন তারাও শুধু দরদাম দেখে চলে যাচ্ছেন। আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের খুরুস্কুল ব্রিজ সংলগ্ন পশুর হাটে ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন টেকনাফের ব্যবসায়ী আজিজুল হক। গত তিন দিনে তার ১২টি গরুর মধ্যে মাত্র চারটি বিক্রি হয়েছে।

আজিজুল হক বলেন, ‘গত চার-পাঁচ বছর ধরে কোরবানির ঈদে এই হাটে গরু নিয়ে আসি। এবারও ১২টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। বাজার এখনো জমে ওঠেনি। তাই ক্রেতা নেই। যারা বাজারে আসছেন তারা দরদাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন।’

শুধু আজিজুল নয়, তার মতো একই কথা জানিয়েছেন বাজারে আসা অন্য ব্যবসায়ীরাও।

কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া বাজারে দুটি গরু নিয়ে এসেছেন আরেক ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দুটি গরু নিয়ে বাজারে এসেছি। এখনো বিক্রি হয়নি। ছয় মাস আগে দুটি গরু কিনেছিলাম আড়াই লাখ টাকায়। এই ছয় মাস লালন-পালন করে বাজারে নিয়ে এসেছি।’ গরু দুটি লাখ টাকার কম বিক্রি করলে লোকসান হবে বলে জানিয়েছেন এই বিক্রেতা।

এবার গরুর দাম একটি বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা গরুগুলো কোরবানির ঈদের পাঁচ-ছয় মাস আগে কিনে সেগুলো লালন-পালন করি। যেসব ব্যাপারীর কাছ থেকে আমরা গরু কিনি, এবার সেখানেই দাম বেশি। তাই এবার গরুর দাম একটু বেশি হবে।’

কক্সবাজারের চকরিয়ার ইলিশিয়া বাজারের ছাগল বিক্রেতা ইব্রাহিম বলেন, ‘এখানে কিছু কিছু গবাদি পশু বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার এখনো পুরো জমে ওঠেনি। ক্রেতারা গরু-ছাগল দেখছেন, দাম হাকাচ্ছেন, কিন্তু না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’

এদিকে কোরবানির পশুর দাম বেশি জানিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমার ছড়ার চিকনী পাড়া গ্রামের জাফর আলম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন বাজার ঘুরেও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে কোরবানির পশু ক্রয় করতে পারছি না।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ৪৪টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এসব বাজারে এখনো বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হয়নি।

রামু কলঘর গরু বাজারের ইজারাদার এরফান বলেন, ‘এখনো বাজার জমে ওঠেনি। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা আর নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি প্রশাসনও আমাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। বাজারে এখন ক্রেতা অনেক কম। আশা করছি শুক্রবার থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘জেলার ৪৪টি কোরবানির পশুর হাটে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। জালনোট শনাক্তকরণের মেশিন বসিয়েছে ব্যাংকগুলো। পশুর স্বাস্থ্য নিরীক্ষণে রয়েছে মেডিকেল টিম।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘পশুর হাটগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টহল পুলিশের পাশপাশি বাজারগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকছে। কেউ অনিরাপদ মনে করলে কোরবানির পশু বা টাকাসহ মানুষদের বাড়ি পৌঁছে দেবে পুলিশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন