স্কুলের নাম নিয়ে দ্বন্দ্বে ১৪৪ ধারা জারি

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরাবাজার ইউনিয়নে বিদ্যালয়ের নামকরণ নিয়ে বিদ্যমান দু’পক্ষের উত্তেজনার প্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

এদিকে ১৪৪ ধারা বিদ্যালয়ের আশপাশ এলাকায় জারি থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যে কোনো সময় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হওয়ারও আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে উপজেলার টেংরা বাজারে অব্যবহৃত একটি আশ্রয় শিবিরে অস্থায়ীভাবে ‘টেংরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ নামেই ওই আশ্রয় শিবিরে চলতি ২০১৯ শিক্ষা বর্ষের পাঠদান শুরু হয় এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ২৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। পরবর্তীতে একই ইউনিয়নের শালন গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী আরজান খান ভূমি দানের শর্তে ‘আরজান খান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়’ নামকরণের প্রস্তাব দেয়া হয়।

সে আলোকে বিদ্যালয়েল ম্যানেজিং কমিটির সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হলে আরজান খান বিদ্যালয়ের নামে ৭৫ শতাংশ জমি (৫০৫/১৯ নং দলিলে) ক্রয় করে দান করেন। পরে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘আরজান খান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে সাইবোর্ড লাগানো হয়। এদিকে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে এলাকায় পক্ষে বিপক্ষে দু’টি গ্রুপ সৃষ্টি হয়।

এদিকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুরসহ ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও ভুমিদাতা প্রবাসী আরজান খানের শ্বশুড় আবুল ফয়েজ ৭ এপ্রিল মৌলভীবাজার আদালতে পিটিশন (নং ১০৪/২০১৯) দায়ের করেন। এ মামলায় টেংরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু খান ও তার ২ ভাইসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়। এঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।

এদিকে নতুন জমিতে আমেরিকা প্রবাসী আরজান খান নিজস্ব অর্থায়নে ভবন তৈরি করে দেন। সেখানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রমও শুরু করেছেন। অপর দিকে ‘টেংরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়’ নামের পক্ষের লোকজন আশ্রয় শিবিরে ওই নামে আরেকটি স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নতুন ক্যম্পাসে আরজান খান উচ্চ বিদ্যালয় চালু হওয়ার পর সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয়ে চলে যান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন যাবত উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উপজেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের আশপাশ এলাকায় গত ০৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। এতে বন্ধ রয়েছে উভয় বিদ্যালয় ফলে লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষার্থীদের।

রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসেম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে তা প্রত্যাহার করা হবে।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসি আক্তার জানান, সোমাবার (৯ সেপ্টেম্বর) আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হবে। সেই সাথে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হতে পারে।

আপনি আরও পড়তে পারেন