১৮২ তরুণীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও তুলে টাকা না দিলে ফেসবুকে ছাড়ার হুমকি

বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতো। তাদের প্রস্তাবে সাড়াও দিতেন তরুণীরাও। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই বন্ধুত্ব গড়াতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে। গত সাত বছরে ১৮২ জন তরুণীর নগ্ন ভিডিও তুলে রেখেছেন তারা!শুধু তাই নয়, তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও তুলে রাখত আনিশ ও আদিত্য। পরে সেই সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়েও আসত।ওই তরুণীদের ঘনিষ্ঠ ভিডিও তোলা রয়েছে মোবাইলে। টাকা না দিলে সেই ভিডিও আপলোড করে দেওয়া হবে সমাজমাধ্যমে।

গত নভেম্বরে এমন হুমকি-ফোন পেয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন এক তরুণী। পরে তিনি সাহস করে ভারতের কলকাতার লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন।

অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। যে ব্যক্তি ফোন করেছিল, প্রথমে ধরা হয় সেই কৈলাস যাদবকে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, তাকে দিয়ে ওই ফোনগুলি করিয়েছে তার মালিক আনিশ লোহারকর এবং আনিশের বন্ধু আদিত্য আগরওয়াল। চমকের আরও বাকি ছিল।

আনিশ এবং আদিত্যকে গ্রেফতার করার পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শুধু অভিযোগকারী তরুণীরই নয়, আনিশ এবং আদিত্য গত সাত বছরে ১৮২ জন তরুণীর নগ্ন ভিডিয়ো তুলে রেখেছে!

আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছে আনিশ, আদিত্য এবং কৈলাস। এদের মধ্যে আদিত্য একটি নামী পোশাক বিপণি সংস্থার মালিকের ছেলে। পুলিশ সূত্রের খবর, আনিশ এবং আদিত্যকে জেরা করে জানা গিয়েছে, তারা ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্ব পাতাত। তাদের প্রস্তাবে সাড়াও দিতেন তরুণীরা। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই বন্ধুত্ব গড়াত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে। শুধু তাই নয়, তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও তুলে রাখত আনিশ ও আদিত্য। পরে সেই সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়েও আসত।

প্রথমে শুধু ভিডিও তুলে রাখলেও এক বছর আগে দু’জনে ঠিক করে, সেই ভিডিওর নাম করে তারা তরুণীদের থেকে টাকা আদায় করবে। কিন্তু নিজেরা করলে ধরা পড়ে যাবে সেই ভয়ে আনিশ তার বাড়ির পরিচারক কৈলাসকে দিয়ে হুমকি-ফোন করাত।

তদন্তে নেমে পুলিশ কৈলাসের মোবাইল থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তরুণীকে করা ফোন নম্বর এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পেয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে এক জন আনিশদের পাঁচ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন। সম্প্রতি কৈলাসকে দিয়ে আনিশ অভিযোগকারী তরুণীকে ফোন করিয়ে ১০ লক্ষ টাকা চায়। হুমকিও দেয়। তরুণী প্রথমে ভয় পেলেও পরে সোজা লালবাজারে পৌঁছে যান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে কৈলাসকে ধরে জেরা করতেই আসল গল্প বেরিয়ে আসে।

মঙ্গলবার আনিশ এবং আদিত্যকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল। সরকারি কৌঁসুলি স্নেহাংশু চক্রবর্তী জানান, ধৃতদের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক

আপনি আরও পড়তে পারেন