পিরোজপুরে চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা

‘মা-বাবা আমি তোমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কারণ তোমরা মরে গেলে আমি কিভাবে থাকবো। আবদারটা রেখো আমার হাত থেকে দুইবার কোরআন শরীফ পড়ে গিয়েছে তাই কোনও গরীব ভিক্ষুককে ৫০টাকা করে ১০০ টাকা দিও। আপু তোরা মাকে দেখিস। তোরা মা-বাবার কাছে থাকিস। তোদেরকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি কস্ট নিস না’।

পরিবারের কাছে এমন চিঠি লিখে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামের নাজিম হাওলাদার(১৩) নামে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যা করেছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে বসত ঘরের পিছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার পূর্বে সে পরিবারের কাছে এ চিঠি লিখে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল থেকে নিহত ওই স্কুল ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের অভাব অনটনে মনোকস্টে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।

নিহত নাজিম হাওলাদার উপজেলার পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামের দিনমজুর এস্কান্দার হাওলাদারের ছেলে। সে উপজেলার পূর্ব ধাওয়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, নাজিমের দিনমজুর পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অভাব অনটন চলে আসছিলো। এমন অবস্থায় তার মা দুরারোগ্য ব্যাধিতে শয্যাশায়ী। দিনমজুর পিতার পক্ষে পরিবারের ভরণপোষণ করা কষ্টকর ছিল। তিন বোন আর অসুস্থ্য মায়ের দুরাবস্থার মাঝে নাজিমের লেখাপড়া নিয়ে চরম হতাশায় সে আত্মহত্যা করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যার আগে সে তার বাবার সাথে আসরের নামাজ আদায় করে। পরে পরিবারের কাছে চিঠি লিখে সে সকলের অগোচরে বসতঘরের পিছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের লোকজন গাছে নাজিমের লাশ ঝুলতে দেখে থানায় খবর দেয় পরে পুলিশ এসে ওই স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ওই স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় এবং পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন