ওমানের সড়কে প্রাণ ঝরল মৌলভীবাজারের ৩ জনের

মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৌলভীবাজারের ৩ জনসহ ৫ বাংলাদেশী নিহত হয়েছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়) ওমানের আদম এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়। নিহতদের খবর বাংলাদেশীদের বাড়িতে পৌঁছালে শুরু হয় শোকের মাতম। নিহত ৫ জনের মধ্যে ৩জন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ও হাজীপুর ইউনিয়ন এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

নিহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাজ শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে বাইসাইকেলযোগে ফেরার সময় দ্রুতগতির প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ৪ বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক একজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান।

মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ বাংলাদেশীর মধ্যে মৌলভীবাজারের তিনজন হলেন- কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের লিয়াকত আলী (৩৫), শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের সবুর আলী (৩৩) ও কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া বাজারের টিলালাইন এলাকার আলম আহমদ (৩৫)। বাংলাদেশী অপর দু’জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের নিহত আলমের ছোট ভাই ওয়াসিম বলেন, আমার বড় ভাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আশায় বাড়িতে স্ত্রী ও ২ সন্তানকে রেখে ধার-দেনা করে ৬ মাস পূর্বে ওমানে পাড়ি দেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পরিবারের স্বচ্ছলতার জায়গায় আজ আহাজারির মাতম।

নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, প্রবাস আমার সংসার জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। ধার-দেনা করে আমার স্বামী বিদেশে গিয়েছিলেন পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে। এখন এই ধার-দেনা কিভাবে পরিশোধ করবো।

এ দিকে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আলম আহমদের পরিবারেও চলছে কান্নার রোল। স্থানীয় ইউপি সদস্য শামীম আহমদ জানান, আব্দুল বাছিতের ছেলে আলম আহমদ ৫ মাস আগে ওমানে যান। বাড়িতে তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের লিয়াকত আলীর চাচা মাসুদুর রহমান জানান, বিলেরপার গ্রামের মুসলিম আলীর ছেলে লিয়াকত প্রায় ৪ বছর আগে ওমানে যান। তার স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সের এক সন্তান রয়েছে। সেখানে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে পরিবার চালাতো লিয়াকত। পাসপোর্ট নবায়ন করে দুই মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল তার। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত সবার ছোট। তার মৃত্যুতে পরিবারে গভীর শোক বিরাজ করছে।

কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের নিহত সবুর আলীর মামাতো ভাই কামাল খান বলেন, গ্রামের আব্দুস শহীদ এর ছেলে সবুর আলী ১০ বছর ধরে ওমান ছিল। দুই বছর আগে দেশে আসে একবার। কিছুদিন থাকার পর আবার ওমান পাড়ি জমায়। তার মা আছেন, বাবা নেই। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। বাড়িতে নিহত সবুরের ২ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে।

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন