গার্মেন্টসে নামাজ বাধ্যতামূলক করা সংবিধান বিরোধী: আইনমন্ত্রী

গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় সব কর্মকর্তা, কর্মচারীর জন্য অফিস চলাকালীন প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে যোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

৯ ফেব্রুয়ারি জারি করা এক নোটিশে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাঞ্চ মেশিনে পাঞ্চ করতে হবে। যদি কোনো স্টাফ মাসে সাত ওয়াক্ত পাঞ্চ করে নামাজ না পড়েন তবে সেক্ষেত্রে তার বেতন হতে একদিনের সমপরিমাণ হাজিরা কাটা হবে।

মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড নামের এই কারখানার অপারেশন্সবিষয়ক পরিচালক মেসবাহ ফারুকী জানিয়েছেন, এটি শুধু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য। যদিও নোটিশে লেখা, ‘সকল স্টাফ’।

তবে এই ব্যাপারে ভিন্নমত পোষন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ ধরণের নির্দেশনাকে বাংলাদেশের সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বিবিসি বাংলাকে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন কেন? সংবিধানেই তো বলা আছে ধর্ম কারও ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। কোনো আইন দিয়েই এটা বাধ্যবাধকতা দেয়া যায় না। ইসলাম ধর্মও বলে না কারও ওপরে ধর্ম চাপিয়ে দেয়া যাবে। আপনি যেমনটি বলছেন, তেমনটি হলে তো এটা খতিয়ে দেখতে হবে।’

এদিকে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলছেন, কর্মীদের বাধ্যতামূলক নামাজ পড়ানোর ঘটনা বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করতে পারে।

‘বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে অনেক সমস্যা থাকার পরেও ক্রেতারা এখনও মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। তাজরিন ও রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনার আগে বিদেশি ক্রেতাদেরও এতকিছু জানা ছিল না। কিন্তু কারখানার ভেতরে এরকম আইন যদি তারা করেন, তাহলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে।’

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন